স্বামীর ভিটায় ফিরতে ব্যাকুল সেই বৃদ্ধা

রাস্তা থেকে উদ্ধার হওয়া হারিছা বেগম। ছবি: সমকাল
বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৩ | ২২:৩৩ | আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৩ | ২২:৩৭
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির ওয়াপদা মোড় থেকে উদ্ধার হওয়া হারিছা বেগম (৮৫) স্বামীর ভিটায় ফিরতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন। তবে তাঁর পরিবার ও স্বজনের সন্ধান না পাওয়ায় তাঁকে কোনো সেফহোম অথবা প্রবীণ নিবাসে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে প্রশাসন।
গত ২৩ জুন হারিছা বেগমকে বালিয়াকান্দি উপজেলার ওয়াপদা মোড়ের একটি যাত্রী ছাউনি থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাঁকে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগী ও তাঁদের স্বজনের সঙ্গেই ঈদ উদযাপনসহ সময় কাটাচ্ছেন তিনি।
গতকাল রোববার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, রুগ্ণ ও জীর্ণ শরীরে হাসপাতালের বিছানায় ঘুমিয়ে আছেন হারিছা। পাশের বিছানার চিকিৎসাধীন শাহিনা আক্তার জানান, শনিবার রাত থেকে হালকা জ্বরে ভুগছেন হারিছা। গত শুক্রবার থেকে খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। খাওয়ার কথা বললে অভিমানের সুরে অস্ফুট কণ্ঠে ও ইঙ্গিতে জানাচ্ছেন, তিনি আর খেতে চান না। ফিরতে চান নিজ ভিটায়, স্বামীর ঘরে। তাঁর বিছানায়ও কাউকেই বসতে দিচ্ছেন না। কথাও বলছেন কম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন সরকার জানান, হারিছা বেগমের বয়স অনেক বেশি। এই বয়সে এসে এমন বাস্তবতায় তিনি কিছুটা মানসিক বিপর্যস্ত। তবে তিনি সুস্থ আছেন। নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম জানান, হারিছা বেগমের পরিবারের খোঁজে প্রশাসন, গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয় অনেকেই কাজ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও অনেকে প্রচার করেছেন। কিন্তু তাঁর পরিবারের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। এখন তিনি অনেকটা সুস্থ। স্বজনের সন্ধান না পাওয়ায় শিগগিরই তাঁকে পার্শ্ববর্তী জেলা ফরিদপুরের সেফহোম অথবা প্রবীণ নিবাসে স্থানান্তর করা হবে।
হারিছা বেগমের ভাষ্যমতে, তাঁর বাড়ি ফরিদপুরে। স্বামীর নাম মৃত আরব আলী। আবদুল হোসেন ও আলমগীর হোসেন নামে তাঁর দুই ছেলে রয়েছে। তাঁর ছেলেরা তাঁকে একটি যাত্রী ছাউনিতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।