‘শেখ হাসিনা সুখের চাবি দিল’

নতুন ঘরের চাবি ও দলিল হাতে জহুরা বেগম - সমকাল
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০
বিয়ের কয়েক বছর পর দুই সন্তানের মা হন জহুরা। তার কিছুদিন পর মারা যান স্বামী জালু ফকির। এর বছর সাতেক পর একমাত্র ছেলেটিও মায়ের কোল খালি করে পাড়ি জমায় না ফেরার দেশে। মেয়েটির বয়স ১৩-১৪ বছর হলে বিয়ে দেন জহুরা। বিয়ের দুই বছর পর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে একমাত্র মেয়েও। এখন স্বামীর বড় ভাইয়ের ছেলে মহর আলীর বাড়িতে থাকেন তিনি। ভিক্ষে করে ডাল-ভাত জোটে তাঁর।
বুধবার সকালে শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদে যান বৃদ্ধা জহুরা। তাঁকে ডুবারচর আশ্রয়ণে জমিসহ একটি পাকা ঘর দেওয়া হয়েছে। ঘরের দলিল হাতে পেয়ে আনন্দে তাঁর চোখ বেয়ে অঝোর ধারায় পানি পড়ছিল। অনুভূতি জানতে চাইলে বুক চাপড়ে বলতে থাকেন, ‘ঘর পাইয়া কইলজাডা ঠান্ডা হইয়া গেছে। আমি আজন্মা দুঃখী। সুখ আমার কপালে সয় না। বাবা, মা, স্বামী, সন্তান সব হারাইছি। আইজ নতুন ঘরের দলিল ও চাবি পাইলাম। গতকাইল গেছিলাম ঘর দেখতে। খুব সুন্দর ঘর। শেখ হাসিনা সুখের চাবি দিল। অহন চিন্তা করতাছি এই সুখ সইবো কিনা।’
একই দিন সদর উপজেলা পরিষদে হাজির হন জহুরার মতো ১০১ আশ্রয়হীন পরিবারের সদস্য। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও জেলা প্রশাসক আবদুল্লাহ আল খায়রুম।
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে হারিয়ে গেছে কুলুরচর ব্যাপারীপাড়ার একাংশ। অর্ধশতাধিক বছর আগে ব্যাপারীপাড়ায় আবাস গড়ে তুলেছিল নৌকায় করে আসা শতাধিক পরিবার। ইউএনও মেহনাজ ফেরদৌস বলেন, এসব জনগোষ্ঠীর মানুষকে কেউ বলে সানদার আবার কেউ বলে বেদে। এদের ৭০ পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে।
কথা হয় ঘর নিতে আসা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গৃহবধূ রাবেয়ার সঙ্গে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে। সবাই কমবেশি প্রতিবন্ধী। অন্ধ রাবেয়া বলেন, ‘আমরা অহন সুখের ঘর বাঁধমু। আর কষ্ট থাকবো না।’ তাঁর স্বামী রবিজলের ভাষ্য, তাদের দুঃখের শেষ নেই। একসময় থাকতেন নৌকাতে। অনেক আশা নিয়ে কুলুরচরে বসতি গড়ে তোলেন। কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের তাণ্ডবে সব হারিয়েছেন। এখন শেখ হাসিনার দেওয়া ঘর পেয়ে সুখের স্বপ্ন দেখছেন।
- বিষয় :
- গৃহহীন
- আশ্রয়ণ প্রকল্প
- ঘর হস্তান্তর