ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল

ছাদ ভেঙে পড়ার আতঙ্ক নিয়ে চিকিৎসাসেবা

ছাদ ভেঙে পড়ার আতঙ্ক নিয়ে চিকিৎসাসেবা

শরীয়তপুরে ঝুঁকিপূর্ণ হাসপাতাল ভবনে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা-সমকাল

সোহাগ খান সুজন, শরীয়তপুর

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০

শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ছাদের ধস ঠেকাতে বিভিন্ন স্থানে লোহার খুঁটি বসানো হয়েছে। আতঙ্ক নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও কর্মাচারীরা। রোগীরা ভয়ে ভয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গত পাঁচ বছরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ভবনের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এতে রোগীদের আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। গণপূর্ত বিভাগের ডিজাইন শাখা থেকে দুই বছর আগে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের নিচতলার করিডোর, বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে যাওয়ার করিডোর, এক্স-রে কক্ষ ও অফিস কক্ষে বসানো হয়েছে লোহার খুঁটি। হাসপাতালের কমপক্ষে ১০টি স্থানে পলেস্তারা খসে পড়েছে।

গণপূর্ত বিভাগ ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার পরেও ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসক, কর্মচারী ও রোগীরা মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়ার আতঙ্কে রয়েছেন।

২০১৮ সালে ভবনটির নিচতলার পূর্ব দিকে বহির্বিভাগের চিকিৎসকদের রুমের সামনের দিকের ছাদ ভেঙে পড়ে তিন রোগী আহত হন। এর পর কয়েক দফায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের রুম, টিকিট কাউন্টারের সামনের ছাদ, বহির্বিভাগ ফার্মেসির ছাদ, সিঁড়ির দিকের ছাদ ভেঙে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দিলে ২০২১ সালের ২৮ জুলাই গণপূর্ত বিভাগের বিশেষজ্ঞ টিম হাসপাতাল ভবন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে ভবনটির কাঠামোগত নকশা পায়নি। বিশেষজ্ঞ টিমের সদস্য ও গণপূর্ত বিভাগের ডিজাইন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী লিন্টু গাজী প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ভবনটির নিচতলার বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা ও কভার খুলে গেছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

১০০ শয্যার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় রূপান্তরের ঘোষণা দেয় সরকার। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে নতুন একটি আটতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি গণপূর্ত বিভাগ। এদিকে হাসপাতাল ভবনের নিচতলার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে লোহার খুঁটি বসিয়ে ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে।

সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগের ফার্মেসির ইনচার্জ নাসির উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘কিছু দিন আগে রাতের বেলা ছাদ ভেঙে পড়ে। আমাদের সৌভাগ্য– এটা রাতে হয়েছে। দিনে হলে আমাদের কী হতো তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, নতুন ভবনটি অতি জরুরি ভিত্তিতে হস্তান্তর করা হোক।’

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, সদর হাসপাতাল শরীয়তপুরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র। এখানে প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৬০০ ও ৭০০ এবং আন্তঃবিভাগে ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। হাসপাতালটি দ্বিতল ভবনের হলেও এটাকে তিন তলায় রূপান্তর করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ বার ভবনের দেয়ালসহ ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে।

শরীয়তপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মহিবুর রহমান বলেন, আগামী মাসের ৭ তারিখে তারা দ্বিতীয় তলা এবং তৃতীয় তলা ব্যবহার করার জন্য হাসপাতালকে প্রস্তুত করে দেবেন।

আরও পড়ুন

×