এএসআইর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের অভিযোগ

কালো টাকা লেনদেনে অস্বীকৃতি জানানোয় যশোরে পুলিশের এক এএসআইর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উজ্জ্বল বিশ্বাস নামে এক ব্যবসায়ী।

উজ্জ্বলের অভিযোগ, যশোর পুলিশ লাইনের রিজার্ভ অফিসে কর্মরত এএসআই আশীষ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সূত্র ধরে তার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কালো টাকা লেনদেন করেছেন। ধারাবাহিকভাবে এ কাজ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় আশীষ তাকে নানাভাবে নির্যাতন শুরু করেন। এখন তিনি প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

বুধবার দুপুরে প্রেস ক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে উজ্জ্বল জানান, তার যশোর শহরতলির পালবাড়ি মোড়ে ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকান রয়েছে। দোকানে আসা-যাওয়া করায় এএসআই আশীষের সঙ্গে তার পরিচয়। আশীষ ছোট ভাই হিসেবে উজ্জ্বলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। এক পর্যায়ে আশীষ ব্যস্ত থাকার অজুহাতে উজ্জ্বলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ছোটখাটো লেনদেন করতে থাকেন। পরে উজ্জ্বল খেয়াল করেন, ওই অ্যাকাউন্টে আশীষ লাখ লাখ টাকা লেনদেন করছেন।

একদিন পুলিশের দুই সদস্য এএসআই আশীষের জন্য তার কাছে ১৪ লাখ টাকা রেখে যান। আশীষ ফোন করে ওই টাকা উজ্জ্বলকে তার অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে বলেন। পরবর্তীতে সেই টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।

উজ্জ্বল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, এএসআই আশীষ ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে গত জুলাই পর্যন্ত তার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রায় ৬৫ লাখ টাকা লেনদেন করেছেন। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় উজ্জ্বল এক পর্যায়ে লেনদেনের জন্য তার অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উজ্জ্বলের ওপর নির্যাতন শুরু করেন এএসআই আশীষ। তিনি উজ্জ্বলের দোকান ভাঙচুর করে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক এবং পাসওয়ার্ডসহ দুটি ব্যাংকের কার্ড ছিনিয়ে নেন। এর পাশাপাশি পাচ লাখ টাকার একটি চেক এবং ফাঁকা স্ট্যাম্পে উজ্জ্বলকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। এখন এএসআই আশীষ তার কাছে ২৫ লাখ টাকা পাবেন দাবি করে আটক ও গুমের হুমকি দিচ্ছেন। এএসআই আশীষ নিজেকে ডিআইজির লোক পরিচয় দিয়ে হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে এএসআই আশীষকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইনের দাবি, সংবাদ সম্মেলন করা উজ্জ্বল বিশ্বাসের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। মাদকসহ অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে তিনি জড়িত। বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তবে নির্যাতনের প্রসঙ্গটি জানেন না বলে দাবি করেন তিনি।