ক্লিনিকের নারী কর্মী খুন, স্বামী গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ১৭:২১
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় হাফিজা খাতুন নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকের এক নারী কর্মী খুন হয়েছেন। শনিবার রাতে শহরের মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তাকে আহত অবস্থায় জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হাফিজা (৩৫) জীবননগর উপজেলার বালিহুদা গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী ও একই উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের সমসের আলীর মেয়ে।
জানা গেছে, হাফিজা খাতুন আট বছরের বেশি সময় ধরে ওই ক্লিনিকে সেবিকার কাজ করেন। প্রথম স্বামীর সঙ্গে তালাক হলে দুই বছর আগে টাইলস মিস্ত্রী কবির হোসেনকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। বিয়ের পর কিছুদিন চাকরি ছেড়ে দিলেও গত ছয় মাস আগে আবার স্বপদে ওই ক্লিনিকে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে থাকতেন। শনিবার রাত আটটার দিকে হাফিজা দোতলায় নিজের থাকার কক্ষ থেকে চিৎকার দিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বের হয়ে নিচতলায় অভ্যর্থনা ডেস্কের সামনে এসে পড়ে যান। তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত হাফিজার সহকর্মীদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে হাফিজার সঙ্গে তাঁর স্বামী কবির হোসেনের মনোমালিন্য চলে আসছিল। তাদের ধারণা, হাফিজার স্বামীই তাকে গলা কেটে হত্যা করেছেন।
বিউটি খাতুন নামে হাফিজার এক সহকর্মী বলেন, ঘটনার রাতে তিনি ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় হাফিজার সঙ্গে কথা শেষে তৃতীয় তলায় যান। এর মিনিট পাঁচেক পর নিচের তলায় নামলে হাফিজার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে বিষয়ে তার ধারণা নেই। তবে ওই দিন সকালে হাফিজার স্বামী ক্লিনিকে এসেছিলেন। সে সময় স্বামীর সঙ্গে হাফিজার কথা কাটাকাটি হয়।
মা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শামিম হোসেন মুঠোফোনে জানান, তিনি রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছেন। ফোনে ঘটনা জানতে পেরেছেন। পুরো ব্যাপারে তার ধারণা নেই।
ওই ক্লিনিকের ম্যানেজার কেয়া খাতুন বলেন, শনিবার রাত ৭টার দিকে তিনি ক্লিনিক থেকে বাড়ি চলে যান। রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা শোনেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রাগবির হাসান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই ওই নারী মারা গেছেন। নিহত নারীর গলা ও হাতে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের একাধিক চিহ্ন পাওয়া গেছে।
পুলিশ শনিবার রাতেই জীবননগর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে অভিযুক্ত কবির হোসেনকে আটক করে। পরে হাফিজার বাবা শমসের আলী কবিরকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। রোববার কবিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবীদ হাসান বলেন, হাফিজার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কবির হোসেন তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।