অঝোরে কাঁদছেন নবপরিণীতা স্ত্রী, ছেলেকে ফিরে পেতে মা পড়ছেন দোয়া-দরুদ
জলদস্যুর হাতে জিম্মি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আলী হোসেন

আলী হোসেনের স্ত্রী ইয়ামনি
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৪ | ১৭:৪৬ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৪ | ২১:০৩
নবপরিণীতা স্ত্রীকে রেখে আড়াই মাস আগে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এম ভি আবদুল্লাহ’র নাবিক হিসেবে যোগ দেন বরিশালের বানারীপাড়ার মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আলী হোসেন (২৬)। মঙ্গলবার মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজটি। জিম্মি করা হয় জাহাজে থাকা ২৩ নাবিককে, যার মধ্যে রয়েছেন তিনি।
আলী হোসেন বানারীপাড়ার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারেরপাড় গ্রামের এমাম হোসেনের ছেলে। মঙ্গলবার দুপুরে জলদস্যুরা তাদের জিম্মি করার পর বিকাল ৩টার দিকে মুঠোফোনে স্ত্রীকে ফোন দেন তিনি। জানান- সোমালিয়ান জলদস্যুরা তাদের জাহাজে হামলা করে সবাইকে জিম্মি করেছে। মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় হয়তো মুক্তি পাওয়ার আগে আর যোগাযোগ হবে না। তাদের জন্য যেন বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই দোয়া করেন। এরপর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ কথা শোনার পর থেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। অঝোরে কাঁদছেন সদ্যবিবাহিত স্ত্রী ইয়ামনি। আহাজারি করে বলছেন, ‘কোরবানির ঈদে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল আলীর। পরিকল্পনা ছিল দুইজন মিলে ঈদের ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাবেন।’
এদিকে ছেলের জিম্মি হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন আলী হোসেনের মা নাসিমা বেগম। তিনিও অঝোরে কাঁদছেন। ছেলেকে ফিরে পেতে পড়ছেন দোয়া-দরুদ। ছেলেসহ জিম্মি সবাইকে স্বজনের কাছে ফিরিয়ে দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
জিম্মি নাবিক আলী হোসেনের বাবা স্থানীয় ইউবিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক দপ্তরি এমাম হোসেন জানান, কোরবানির ঈদে বড় ভাই জুলফিকারের সঙ্গে বাড়িতে এসে একসঙ্গে কোরবানি দেওয়ার কথা বলেছিল আলী হোসেন।
স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের জুলাই মাসে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় বিয়ে করেন আলী হোসেন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে ২০১৪ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জের মেরিন একাডেমিতে। সেখানে ৪ বছর পড়ালেখা শেষ করে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন ২০২০ সালে। আড়াই মাস আগে কেএসআর এম শিপিং লিমিটেডের নিজস্ব খরচে সাউথ কোরিয়ায় গিয়ে এম ভি আবদুল্লাহ নামের ওই জাহাজে নাবিক (ওয়েলার) হিসেবে কাজ শুরু করেন।
- বিষয় :
- জলদস্যু
- জিম্মি
- সোমালিয়া
- জাহাজ জিম্মি
- ভারত মহাসাগর