সন্তান জন্মদানের পর মারা গেলেন সাফজয়ী নারী ফুটবলার রাজিয়া সুলতানা

সন্তান জন্মদানের কয়েক ঘণ্টা পর অসুস্থ হয়ে অনুর্দ্ধ-১৯ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সাবেক সদস্য রাজিয়া সুলতানা (২১) মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামের বাবার বাড়ি থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহীন নারী ফুটবলার রাজিয়া সুলতানার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে বাবার বাড়ি কালিগঞ্জের লক্ষীনাথপুরে স্বাভাবিকভাবে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন রাজিয়া। তিনি কালিগঞ্জ উপজেলার লহ্মীনাথপুর গ্রামের প্রয়াত নূরালী সরদারের মেয়ে।

রাজিয়া সুলতানার ভাই মো. নজরুল ইসলাম সরদার জানান, কালীগঞ্জের উপাকুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বঙ্গমাতা ফজিতালুন্নেছা ফুটবল টিমে খেলার সুবাদে সারা দেশে রাজিয়ার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালে চট্টগ্রামের কাপ্তাই এলাকার পোশাক কারখানার কর্মকর্তা ইয়াম রহমানের সঙ্গে রাজিয়ার বিয়ে হয়। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে বাবার বাড়ি কালিগঞ্জের লক্ষীনাথপুরে স্বাভাবিকভাবে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। পরবর্তীতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আজ ভোর ৪টার দিকে কালিগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিল বলে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন। 

আজ বাদ আসর বাড়ির মাসের মসজিদের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তবে বর্তমানে রাজিয়ার সদ্যজাত পুত্র সন্তানটি সুস্থ আছে বলে জানান রাজিয়ার ভাই মো. নজরুল ইসলাম।ভাই নজরুল ইসলাম আরও জানান, তার বোন রাজিয়া সুলতানা পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট। সে অনুর্দ্ধ ১৯ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য হিসেবে বর্তমানে খেলাধুলা করছে। এর আগে সে অনুর্দ্ধ-১৪, অনুর্দ্ধ -১৫, অনুর্দ্ধ-১৬, অনুর্দ্ধ-১৭ ও অনুর্দ্ধ ১৮ দলে সুনামের সঙ্গে খেলা করে। ২০১৮ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সদস্য ছিল রাজিয়া। দেশে ও দেশের বাইরে ভারত, চায়না, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, পাকিস্তান, তাজাকিস্তান ও ইরানসহ বিভিন্ন দেশে ফুটবল খেলে খ্যাতি অর্জন করেছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদ মেহেদি জানান, ফুটবলার রাজিয়া সুলতানা দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। পরে রাত ৩টায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে কালিগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ফুটবল প্রতিযোগিতায় সেরা খেলোয়াড় ছিলেন রাজিয়া। তার অকাল মৃত্যুর খবরে আমরা শোকাহত। বিয়ের পরে গত এক বছর তিনি খেলার বাইরে ছিলেন বলে জানান উপজেলা চেয়ারম্যান।