ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

লাউয়াছড়ায় প্রকট হচ্ছে খাদ্য ও বাসস্থান সংকট

লাউয়াছড়ায় প্রকট হচ্ছে খাদ্য ও বাসস্থান সংকট

ফাইল ছবি

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪ | ১৯:৪০

কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রাণীদের খাদ্য ও বাসস্থান সংকট সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রকট হচ্ছে। গত দুই যুগে এই বনের গভীরতা হ্রাস পেয়েছে অনেকটাই। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও উদ্যানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উদ্যানে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বন্যপ্রাণীরা। কারণ পর্যটকদের অধিকাংশই দায়িত্বশীল নয়। বনের ভেতরে মানুষের বিচরণ বাড়ায় প্রাণীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। দীর্ঘ সময় বন দখল ও উজাড় হওয়ার কারণে প্রাণীদের আবাস, খাদ্য ও অভয়ারণ্য বিনাশ হচ্ছে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে বনে পানির সংকট সৃষ্টি হয়। রেল, সড়কপথ ও বৈদ্যুতিক লাইনের কারণে প্রাণঘাতী হুমকির মুখে পড়েছে অনেক প্রাণী।

প্রতিবছর বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসে সচেতনতা ও প্রাণীর সুরক্ষায় নানা কর্মসূচি পালিত হয়। লাউয়াছড়ায়ও এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তবে কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ আজও মিলেনি। ইতিপূর্বে বন থেকে হরিণশিকারের ঘটনাও ঘটেছে। বিগত বছরে অভিযান চালিয়ে হরিণ শিকারের ফাঁদও উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী বিভাগ। তবে কিছু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা এমনভাবে বাস্তবতা এড়িয়ে যেতে চান যা আপত্তিকর।

কমলগঞ্জের সুধী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত শিক্ষক মিছবাউর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রকৃতিতে টিকে থাকার জন্য প্রজাতি হিসেবে লড়াই একটা মৌমাছিও করে, মানুষও করে। মৌমাছি নিজের খাবার ফলানোর নামে মানুষকে বিষ দিয়ে হত্যা করে না। কিংবা হাতি মানুষের গ্রাম দখল করে উচ্ছেদ করে না। মানুষ ছাড়া মৌমাছি বা হাতি বাঁচতে পারবে। তবে তাদের ছাড়া মানুষ বাঁচবে না। এই সত্য আমরা অনুধাবন করছি না। আমাদের স্বার্থপরতার কারণে প্রকৃতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

লাউয়াছড়া বনের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির প্রধান জিডিসন প্রধান সুচিয়াং জানান, ১৯৯৬ সালে উদ্যান ঘোষণা করলেও ২০১৫ সাল নাগাদ লাউয়াছড়া বন থেকে অবাধে গাছ নিধন হয়েছে। বনের গভীরতা কমেছে। বন্যপ্রাণীর বাসস্থান ও খাদ্যের জোগানের অভাবও দেখা দিয়েছে। তবে কয়েক বছর ধরে গাছ নিধন হ্রাস পেয়েছে; যা বন্যপ্রাণীর জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর।

এদিকে লাউয়াছড়া বনের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বন্যপ্রাণীর খাদ্যের তেমন কোনো সংকট নেই। গাছে গাছে বন্যপ্রাণীর যথেষ্ট খাবার রয়েছে। বাসস্থানেরও সংকট মনে হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরও পড়ুন

×