ফেঞ্চুগঞ্জে বিদ্যুৎকেন্দ্রের শব্দে অতিষ্ঠ মানুষ

বারাকা পাওয়ার লিমিটেড - ফাইল ছবি
ফেঞ্চুগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪ | ১৯:৪৩
ফেঞ্চুগঞ্জের একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের উচ্চমাত্রার শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তারা দ্রুত কেন্দ্রটির শব্দ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বারাকা পাওয়ার লিমিটেড নামের এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি ৫১ মেগাওয়াটের একটি ভাড়াভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। স্থানীয়রা জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কারণে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ভরাউট, বারহাল, পশ্চিম ফরিদপুর, কর্মধা, ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গুচ্ছগ্রাম, রোকনপুর, নারায়ণপুর, মইনপুর, চানপুর, বালাগঞ্জ উপজেলার মধুরাই, সাদেকপুর, আতাশন, মইশাষি, বিনোদপুর ও কায়স্থঘাট এলাকার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ শব্দদূষণের কবলে পড়েছে। দিনের বেলায় শব্দ কিছুটা কম থাকলেও সকাল ও সন্ধ্যা শব্দ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে। এরই মধ্যে স্থানীয় অনেকেই শব্দদূষণের কারণে বাড়িঘর বিক্রি করে এখান থেকে চলে গেছেন।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর তীরে গাড়ুলিকোনায় বারাকা পাওয়ার লিমিটেড নামের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেন দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা। ২০০৯ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এখানকার উৎপাদিত বিদ্যুৎ বৃহত্তর সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরবরাহ করা হচ্ছে। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরেজমিন গিয়ে তীব্র শব্দ শোনা যায়।
ভরাউট গ্রামের খালেদ আহমদ জানান, এই এলাকায় আরও চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। তবে সেগুলো কোনো ধরনের শব্দদূষণ সৃষ্টি করে না। ১৫ বছর ধরে এলাকার বাসিন্দারা বারাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরবচ্ছিন্ন তীব্র শব্দের কারণে অতিষ্ঠ। প্রযুক্তি এখন অনেক উন্নত। শব্দ নিয়ন্ত্রণ খুব কঠিন বিষয় নয়। অবে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারণে এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মচারী শফিকুর রহমান জানান, উচ্চ শব্দদূষণের কারণে কর্মরতরা বধির হওয়ার পথে। ১ মার্চ রাত ১১টায় ওই এলাকায় গিয়ে তীব্র শব্দ শোনা যায়। তখন খুব কাছ থেকে কারও কথা সহজে শোনা যায়নি। লোকজনকে চিৎকার করে কথা বলতে শোনা যায়।
ফেঞ্চুগঞ্জের পার্শ্ববর্তী বালাগঞ্জ ডাইকের বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, শব্দের কারণে মাথাব্যথা ও ঝিমঝিম করে। এমন উপসর্গ লক্ষ্য করা যাচ্ছে অনেকের মাঝেই। ধীরে ধীরে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অনেকবার বলা হয়েছে শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য। তবে সংশ্লিষ্টদে পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক নুরুজ্জামান মিয়া জানান, প্রকল্পটি ১৫ বছর ধরে চলছে। শব্দদূষণের ব্যাপারে এলাকার কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি। ফেঞ্চুগঞ্জের ইউএনও ফারজানা প্রিয়াঙ্কা জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের শব্দের বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে থেকে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ওই এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- বিদ্যুৎকেন্দ্র
- শব্দদূষণ