বৃষ্টিতে পড়ে পানি বাতাসে কাঁপে ঘর

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার ভিটিকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্প সমকাল
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪ | ০০:৩৮
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা ভবেরচর ইউনিয়নের ভিটিকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত ২০টি পরিবারের যেন সমস্যার অন্ত নেই। মূল সমস্যা তাদের জরাজীর্ণ বাসস্থান।
জানা যায়, এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী মানুষেরা অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে শুরু করে নানান সমস্যায় জর্জরিত। এর মধ্যে প্রধান সমস্যা তাদের বসতঘর। আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুটি ব্যারাকে টিনের ২০টি ঘর রয়েছে। ঘরগুলো টিনের চালায় মরিচা ধরে ফুটো হয়ে গেছে। কুয়াশা ও বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে টিনের চালের ওপরে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে পলিথিন। বেড়ার টিন ও লোহার অ্যাঙ্গেলে মরিচা ধরে খুলে পড়ছে। ঘরের বেশির ভাগ দরজা ও জানালা ভাঙাচোরা। একটু জোরে বাতাস বইলেই কাঁপতে থাকে ঘর।
গত শুক্রবার ভবেরচর ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, কাজলী নদীর তীরে অবস্থিত ভিটিকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুটি ব্যারাকে টিনের ২০টি ঘর রয়েছে। টিউবয়েলগুলো অকেজো হয়ে গেছে। নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। প্রতিটি ব্যারাকের শৌচাগারের নাজুক অবস্থা। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে সব বয়সের মানুষ। বসতঘরের টিনের চালে মরিচা ধরে বড় বড় ছিদ্র হয়ে আছে। বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে চালার ওপরে পলিথিন বিছিয়ে ইট দিয়ে রাখা হয়েছে। সিমেন্টের খুঁটিতে ফাটল ধরে কংক্রিট ধসে পড়ছে। বেড়ার কাঠ পচে ও টিনে মরিচ ধরে কাঠ আলগা হয়ে বেড়ায় বড় বড় ফাঁকা তৈরি হয়েছে। ফাঁকা অংশ দিয়ে অনায়াসে একজন ব্যক্তি ঘরে ঢুকে যেতে পারে। ফলে চুরির আশঙ্কায় দিন কাটে বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ২২ থেকে ২৩ বছর হয়ে গেছে ঘরগুলোর। এর মধ্যে প্রতিটি ঘরের টিনের চালে ও টিনের বেড়ায় মরিচা ধরেছে। ঘরের দরজা জানালা ভেঙে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলে ঘরে পানি পড়ে। শীতের মৌসুমে টিনের ফাঁকফোকর দিয়ে বাতাস ঢোকে। ফলে ঠান্ডায় শিশু ও বৃদ্ধ বয়সী মানুষের রোগবালাই লেগেই থাকে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, বৃদ্ধ বয়সে চলতে ফিরতে পারেন না, ছেলেমেয়েরা যা দেয়, তা-ই খান। অনেক আগে সরকার এই ঘর দিয়েছে, এখন ঘর ভেঙে গেছে। ঝড়-বৃষ্টি এলে ভয় করে কোথায় যাবেন।
কল্পনা রানী বলেন, সামান্য বৃষ্টি এলেই টিনের চাল দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে কাপড়চোপড় ও বিছানা ভিজে যায়। তখন ঘরে থাকাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
নবী হোসেন বলেন, আকাশে মেঘ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এখানকার মানুষ। ঝড়বৃষ্টির সময় সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে রাত কাটান। যে কোনো সময় ঝড়ে ঘর ভেঙে তাদের গায়ে পড়তে পারে। তাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই, তাই ভয়ে ও আতঙ্কের মধ্যে এখানেই থাকতে হয়।
গজারিয়ার ইউএনও কোহিনুর আক্তার বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- বৃষ্টি
- আশ্রয়ন প্রকল্প