ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

বাবা নেই, জানেই না সৌরভ

বাবা নেই, জানেই না সৌরভ

বাবা হারানোর শোক স্পর্শ করেনি, খেলায় ব্যস্ত শিশু সৌরভ সমকাল

 ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪ | ২৩:৪০

পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য আশরাফুল ইসলাম সৌরভ পড়ে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকে। মাথার ওপর থেকে বাবা নামের বৃক্ষের ছায়া কেড়ে নিয়েছে ঘাতকরা, তা জানেই না শিশুটি।
হতভাগ্য সৌরভ ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নোয়াগাঁওয়ের সাইকুল ইসলামের ছেলে। সাইকুল পেশায় একজন ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক ছিলেন। গত ৮ এপ্রিল নিখোঁজ হন তিনি। ১৫ এপ্রিল গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে এক যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের সদস্যরা সেটি সাইকুলের বলে শনাক্ত করেন। পুলিশের ধারণা ইজিবাইক ছিনতাইয়ের জন্যই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
তবে বাবার এমন নির্মম পরিণতির কথা জানে না সৌরভ। সে জানায়, তার বাবা ইজিবাইক চালাচ্ছে। সময় হলেই বাড়ি ফিরে আসবে। শিশুটি জানে না, তার বাবা আর কোনো দিনও বাড়ি ফিরবেন না। আর কোনো দিন সাড়া দেবেন না তার ডাকে, মেটাবেন না আবদার।

এদিকে একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে দিশেহারা সাইকুলের পরিবার। নোয়াগাঁওয়ে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের যে ছয়টি ঘর রয়েছে, তার একেবারে পশ্চিমের ঘরটিতে সাইকুলের সঙ্গে থাকতেন তাঁর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মা নুরুন্নেছা বেগম, শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা কারি মিয়া খান, স্ত্রী শরুফা আক্তার ও একমাত্র সন্তান সৌরভ।
পরিবার জানায়, ৮ এপ্রিল সাইকুল বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন তাঁর বাবা ধর্মপাশা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এদিকে ১৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত মরহেদ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পর পরিবার এটি সাইকুলের বলে দাবি করলে পুলিশ মরদেহ তাদের হাতে তুলে দেয়। পুলিশের ধারণা, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের জন্য দুর্বৃত্তরা সাইকুলকে হত্যা করেছে। তবে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন

×