৪০ বছর পর নেপালে ফিরে গেলেন বীর বাহাদুর

বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেন নেপালি নাগরিক বীর বাহাদুর। ছবি: সমকাল
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৪ | ২২:৫৪
পথ ভুলে প্রায় ৪০ বছর আগে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন বীর বাহাদুর নামের এক নেপালের নাগরিক। দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রায় ৩০ বছর যাবত বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকার অলক বসাকের চাতালে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন। ৪০ বছর পর ষাটোর্ধ বীর বাহাদুরের পরিচয় শনাক্ত হলে অবশেষে আজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে আইনিপ্রক্রিয়া শেষে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতের ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হয়ে দেশে ফিরেন বীর বাহাদুর। এ সময় তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি, নেপালের দূতাবাসের উপ-রাষ্ট্রদূত মিস ললিতা সিলওয়াল, দ্বিতীয় সচিব মিস ইয়োজানা বামজান, বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমৃত অধিকারী, বীর বাহাদুরের ভাতিজা রাজন রায়সহ পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইমিগ্রেশন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নেপালের গোরখে বাঙ্গিনা এলাকার অধীর চন্দ্র রায়ের ছেলে বীর বাহাদুর সে সময় মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। কিভাবে তিনি নেপাল থেকে বাংলাদেশ আসেন, কেউ বলতে পারছেন না। তাকে নিয়ে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকা স্থানীয়দের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে নেপালে তার পরিচয় শনাক্ত হয়। এরপর উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে যোগাযোগের পর সর্বশেষ ১৬ মে বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে নেপালি নাগরিক বীর বাহাদুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অনুমতি প্রদান করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ বৃহস্পতিবার তাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
৪০ বছর পর তাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের সময় বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। দীর্ঘদিন পর স্বজনদের কাছে পেয়ে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নেপালী নাগরিক বীর বাহাদুর রায়।
বীর বাহাদুরের ভাতিজা রাজন রায় সমকালকে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ও প্রশাসনের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তারা আমার কাকাকে পরম যত্নে রেখেছিলেন। এজন্য তেঁতুলিয়া প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
নেপালি দূতাবাসের এম্বাসেডর রিয়া ছেত্রী বলেন, আমরা বীর বাহাদুরের পরিবারের পক্ষ থেকে জেনেছি, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীনের মত ছিলেন। একটি ভিডিওতে তাকে দেখে তার ভাবি চিনতে পারেন। এরপর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফজলে রাব্বি বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে পথ ভুলে বীর বাহাদুর রায় বাংলাদেশে আসেন। তার এ অবস্থানকালে কোনো প্রকার মামলা কিংবা বিরুপ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আজ তাকে স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।