ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

গৃহহীন হাজারো মানুষ মেলেনি ত্রাণ সহায়তা

গৃহহীন হাজারো মানুষ মেলেনি ত্রাণ সহায়তা

রিমালের প্রভাব

ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪ | ২৩:১১

‘ঘরডা উড়াইয়া লইয়া গেছে, রান্নার চুলাও ভাইস্যা গেছে। আল্লায় মোগো জানডা বাঁচাইয়া রাখছে। ঘরডা বানাইতে না পারলে স্বামী-পোলাপান লইয়া কোথায় থাকমু? ঘরে নাই কোনো খাওন। পাঁচ দিন ধইরা খাইয়া-না খাইয়া থাকলেও মেম্বর-চেয়ারম্যান, সরকারি স্যাররা ধারেও আয় নাই।’ আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন মধ্য ইন্দুরকানী গ্রামের দিনমজুর আনসারের স্ত্রী রওশনারা বেগম।

একই অভিযোগ করেন ওই গ্রামের ঘর হারানো ইয়াসিন গাজী, শাহীন হাওলাদার, আম্বিয়া বেগম মাতোয়ারা বেগম, রামচন্দ্রপুর গ্রামের কাজল রানীসহ অনেকে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ইন্দুরকানী উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনদিকে নদীবেষ্টিত এ উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষের বাস। ঝড়ে অন্তত দুই হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। গৃহহীনদের কেউ কেউ প্রতিবেশী ও স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। রিমালের প্রভাবে ৯৫ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র পাঁচ টন চাল; যা পাঁচ শতাধিক মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য চাল বিতরণ করলেও বেশির ভাগ মানুষই কোনো সহায়তা পাননি।
উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল আহসান গাজী বলেন, ঝড়ে শতকোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের যথাসম্ভব সহায়তা করে যাচ্ছি। তবে সরকারিভাবে দ্রুত আরও গৃহ নির্মাণসামগ্রী ও খাদ্য সহায়তা পাঠানো দরকার।

এদিকে ঝড়ের পর থেকেই এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে গোসল, খাবার ও রান্নার পানির। গাছের পাতা, পশুপাখি পচে নদী-খাল ও পুকুরের পানি নষ্ট হয়ে গেছে। সেই পানি থেকে দুর্গন্ধ আসছে। এলাকাবাসী পানির জন্য হাহাকার করছে। দ্রুত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের পাশাপাশি ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য সরকারের প্রতি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান, এ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পাঁচ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই চাল ১০ কেজি করে ৫০০ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যও দুই টন চাল বিতরণ করেছেন।

আরও পড়ুন

×