ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

তাড়াশ প্রাণিসম্পদ অফিস

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাস, চলছে দাপ্তরিক কাজও

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাস, চলছে দাপ্তরিক কাজও

তাড়াশ প্রাণিসম্পদ অফিস

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪ | ১১:৩০ | আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪ | ১৩:৩২

ভবনের ছাদের বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। বের হয়ে আছে রড। দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল। বিমেও ফাটলের দাগ। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, ভিজে যায় ওষুধ চিকিৎসা সরঞ্জামসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতি। ফলে সব সময় ঝুঁকিতে থাকতে হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। আতঙ্কে থাকেন সেবা নিতে আসা লোকজনও। এ চিত্র তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের।

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অফিস কাম বসবাসের আবাসিক দোতলা সরকারি ভবনটি নির্মিত হয় ১৯৮৬ সালে। ৪৮ বছরের পুরোনো এ ভবনটির তেমন সংস্কার কাজও হয়নি। ফাটল ধরা ভবনের দেয়ালে বট-পাকুর বাসা বেঁধেছে। ভবনটির নিচতলায় প্রাণিসম্পদ, ভেটেরিনারি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার অফিস কক্ষ। রয়েছে মূল্যবান ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখার স্টোর, কম্পাউন্ডারের কক্ষ, সভা কক্ষসহ দাপ্তরিক নানা কাজে ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি কক্ষ। সবগুলো কক্ষই আংশিক বা পুরোপুরি বেহাল। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখার স্টোরকক্ষে শ্যাওলা পড়ে আছে। বৃষ্টি হলেই পানি চুইয়ে পড়ে। এ অবস্থার মধ্যেই মূল্যবান ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখায় এসবের মান বজায় থাকার বিষয়টি নিয়েও সংশয় থেকেই যায়।

ভবনের দোতলায় দুটি ইউনিটে ভেটেরিনারি কর্মকর্তা, অফিস কম্পাউন্ডারের পরিবারসহ বসবাসের আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু দুটি ইউনিটেরই অবস্থা এতটা শোচনীয় যে, এখানে তারা পরিবার নিয়ে বসবাস করতে ভয় পান।

এ বিষয়ে ভেটেরিনারি সার্জন মো. বাদল মিয়া বলেন, ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। মাঝেমধ্যেই লোকজনের মাথায় ছাদ থেকে পলেস্তারার বড় টুকরা খসে পড়ছে। ছাদের দিকে তাকালেই ভয় হয়। কখন যেন আমার ওপরও পলেস্তারা খসে পড়ে! এ অবস্থায় পরিবার নিয়ে এখানে থাকাটা ঝুঁকিপূর্ণ।

ভবনের দুরবস্থা নিয়ে একই কথা বলেন, এ দপ্তরের অফিস সহকারী মো. ফিরোজ হোসেন। তিনি ভবনটিতে সন্তান ও পরিজন নিয়ে থাকতে ভয় পাচ্ছেন। তারা ভবনটি ছাড়তেও চান। আপাতত বসবাসের জন্য কোনো বাড়ি না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছেন।

শুধু কর্মকর্তা কর্মচারী নন, এ অফিসে আসতে ভয় পান জরুরি সেবাসহ অন্য কাজে আসা লোকজনও। মাঝিড়া গ্রামের মো. সোহানুর রহমান গরু-ছাগলের চিকিৎসা করাতে মাঝেমধ্যে এ অফিসে আসেন। কিন্তু এখানে ঢুকতে তাঁর ভয় লাগে। কখন মাথার ওপর ভবন ধসে পড়ে এ আতঙ্কে থাকেন বলে জানান।

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. অলিউর ইসলাম জানান, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করতে গত ১২ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা বরাবর আবেদন করেছে। তিনি আরও জানান, অফিস কক্ষ থেকে শুরু করে আবাসস্থলেরও একই হাল। কর্মকর্তারা কেউ থাকতে পারেন না। বাইরে ভাড়া বাসায় থাকেন। নিতান্ত বাধ্য হয়ে দু-একজন থাকছেন। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় জীবনের ওপর ঝুঁকি আসতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা জানান, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার জন্য উপজেলার একটি কমিটি আছে। কমিটির সদ্যস্যদের বসে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×