ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

রাজশাহী

শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে আর কর্মসূচি দেবে না নগর আ’লীগ

শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে আর  কর্মসূচি দেবে না নগর আ’লীগ

রাজশাহী নগরের কুমারপাড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪ | ০৫:০৯

রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের এমপি শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে চলমান কর্মসূচি থেকে সরে এসেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে সংগঠনের অনুমতি ছাড়া এ বিষয়ে কাউকে কোনো কর্মসূচি দেওয়া থেকেও বিরত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। 

মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. তবিবুর রহমান গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলন শেষে সমকালকে বলেন, ‘শাহরিয়ার আলমের ঔদ্ধ্যত্যপূর্ণ বক্তব্যের বিষয়টি আপা (প্রধানমন্ত্রী) জানতেন না। পরে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান আসাদের কাছ থেকে জেনেছেন। তিনি জানার পরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন এবং আমাদের শান্ত হতে বলেছেন।’ 

গতকাল সকালে নগরীর কুমারপাড়ার দলীয় কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন নেতারা। ডা. তবিবুর রহমান জানান, শাহরিয়ার আলমের ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ বক্তব্যের পর রাজশাহীর তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে তাঁর বিরুদ্ধে কর্মসূচি দিচ্ছেন। এতে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এসব কারণে এ বিষয়ে কেউ কোনো কর্মসূচি দেবে না। যদি কোনো কর্মসূচি দিতে হয় তা মহানগর আওয়ামী লীগ দেবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ধ্বংসের জন্য একদল লোক কাজ করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও জনকল্যাণে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের অবদানকে খাটো করতে এবং শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে কতিপয় ব্যক্তি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা সব সময় তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে কুৎসা রটনায় লিপ্ত। তারা খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করছে। কেননা তাঁর অবস্থান দল ও জনগণের হৃদয়ের মণিকোঠায়।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত কর্মী। তাঁর সঙ্গে খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। আহত হওয়ার পর রামেক হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেন খায়রুজ্জামান। নিহত ব্যক্তির সন্তানদের অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে পাশে দাঁড়ান। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী শাহরিয়ার আলম আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে খায়রুজ্জামান লিটনসহ অন্যদের আসামি করে নতুন হত্যা মামলার ঘোষণা দেন। ষড়যন্ত্রকারী শাহরিয়ার আলমের এ ঘোষণায় আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

আরও বলা হয়, উচ্চাভিলাষী শাহরিয়ার আলম আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থি, দলের শৃঙ্খলাবিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও জনসাধারণকে শান্ত থাকতে, ধৈর্য্য ধারণের জন্য ও কোনো প্রকার উস্কানি বা প্ররোচনায় কান না দিতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন শাহরিয়ার আলম গংয়ের বিরুদ্ধে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসলাম সরকার বলেন, ‘আমরা এ মুহূর্তে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি না। নেত্রীর কাছে এর সুষ্ঠু সমাধান, দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি সবকিছুই দাবি করছি। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা আমাদের শান্ত হতে বলেছেন। তিনি বিষয়টা দেখবেন।’

দলিল লেখক সমিতির কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম। গত বুধবার বিকেলে মারা যান তিনি। পরদিন আশরাফুল ইসলামের জানাজায় হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলার ঘোষণা দেন এমপি শাহরিয়ার আলম। তবে মেয়র খায়রুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা শাহরিয়ার আলমকেই এ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করেছেন। 

আরও পড়ুন

×