প্রতিবন্ধী পুত্রবধূকে ধর্ষণ, মামলা নিতে পুলিশের গড়িমসি

প্রতীকী ছবি
সিরাজগঞ্জ ও তাড়াশ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪ | ১৬:৫৯ | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪ | ১৭:৫০
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধী পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৪ জুলাই রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে সলঙ্গা থানায় অভিযোগ দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী নারীর (১৯) স্বজনরা।
ঘটনার ১১ দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সমকালের পক্ষ থেকে সলঙ্গা থানার ওসি ও জেলা পুলিশ সুপারকে জানানো হয়। শুক্রবার সকালে সলঙ্গা থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। খবর পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিকও সেখানে যান। এ সময় পুলিশ ও সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে নিজ ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান অভিযুক্ত শ্বশুর।
স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তাঁর স্বামী দু’জনেই শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হলেও কোন সন্তান নেই। পুত্রবধূকে ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন লম্পট শ্বশুর। ঘটনা জানাজানি হলে গত ১৫ জুলাই স্থানীয় ইউপি সদস্য গ্রামের কয়েকজন মাতবরদের নিয়ে স্থানীয়ভাবে বৈঠকে বসেন। পরে কোনো সালিশী না করেই ভুক্তভোগী গৃহবধূকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে সলঙ্গা থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করে বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করে।
ভুক্তভোগী নারীর মা শুক্রবার (২৬ জুলাই) সমকালকে বলেন, ঘটনার বিষয়টি জানিয়ে তাঁর স্বামী ও বড় মেয়ের জামাই গত ১৯ জুলাই স্বশরীরে গিয়ে সলঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসেন। একসপ্তাহ পার হলেও অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেয়নি পুলিশ।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, তাঁর স্বামী হোটেলে মেসিয়ারের কাজ করেন। মাসের অধিকাংশ সময় তিনি রাতেও হোটেলেই থাকেন। গত ১৪ জুলাই তাঁর শ্বাশুড়ি-ননদকেও আত্নীয়স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন শ্বশুর। এরপর রাতে শ্বশুর তাঁকে ধর্ষণ করেন। এর আগেও তিনি ভয় দেখিয়ে তাঁকে ৭/৮ বার ধর্ষন করেছেন। বাধ্য হয়ে ঘটনাটি তিনি স্বজনদের জানান। পরে তাঁর বাবা ও দুলাভাই এসে গ্রামবাসীর কাছে বিচার চাইলেও পাননি।
সলঙ্গা থানার ওসি এনামুল হক সমকালকে বলেন, থানার দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থল ও গৃহবধূর বাবার বাড়িতে পাঠানো হয়েছিলে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বললেও ধর্ষণের বিষয়টি কেউই স্বীকার করেনি। তারা ধর্ষণের চেষ্টার কথা বলেছে। তারপরেও ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে তিনি ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
- বিষয় :
- গৃহবধূ ধর্ষণ
- প্রতিবন্ধী
- নারী
- সিরাজগঞ্জ