ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

গবাদিপশু নিয়ে দুর্ভোগ খামারিদের

ভ্যাকসিন নেই ভেটেরিনারি হাসপাতালে 

ভ্যাকসিন নেই ভেটেরিনারি হাসপাতালে 

কুমারখালী প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে অসুস্থ ছাগল নিয়ে এসেছেন দুই নারী

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৪ | ১৮:১৩

এক মাস ধরে হাঁস-মুরগিসহ গবাদিপশুর ভ্যাকসিন নেই কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে। প্রতিদিনই ভ্যাকসিনের জন্য হাসপাতালে এসে ফিরে যাচ্ছেন খামারি ও কৃষক। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে তাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। 

পান্টি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের খামারি আমির হোসেনের খামারে ৩০০ সোনালি মুরগি আছে। রানীক্ষেত রোগে আক্রান্ত মুরগির জন্য হাসপাতালে গিয়ে ভাকসিন পাননি। বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এতে বাড়তি খরচের সঙ্গে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

একই অবস্থা বাগুলাট ইউনিয়নের দুধ কুমড়াপুর গ্রামের নওশাদ আলীর। ১০টি ষাঁড় গরু আছে তাঁর। একটির বসন্ত এবং অন্যটির চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। তিনিও ভ্যাকসিন পাননি। গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় দেশি মুরগির ৫ লাখ, সোনালি ১ লাখ ৪৬ হাজার, ব্রয়লার ১ লাখ ৫৫ হাজার, লেয়ার ৪৫ হাজার, হাঁস ৯৩ হাজার, কোয়েল ৯ হাজার ৭০০, কবুতর রয়েছে ৭ হাজার ৬৮৫টি। গাভি রয়েছে ৬১ হাজার ৯১৪টি, ষাঁড় ৩২ হাজার ৪২৮টি, ছাগল ৭৫ হাজার ৩৭৭টি, মহিষ ৫৭৬টি, ভেড়া ২ হাজার ৫৮১টি, ঘোড়া ৬৭৫টি, শূকর ২৫টি। পশুগুলোর জন্য প্রতি মাসে গড়ে ৪২ হাজার ডোজ তড়কা, বাদলা, গলাফুলা, ক্ষুরা, রানীক্ষেত, ফাউল কলেরা, ডাকপ্লেগ, গামবোরা, এলএসডিসহ ১৬ পদের ভ্যাকসিন প্রয়োজন হয়। গত ১ জুলাই থেকে হাসপাতালে কোনো ধরনের ভ্যাকসিন নেই। খামার মালিক ও প্রান্তিক কৃষকরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। বাইরে থেকে বেশি দামে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে তাদের। 

বুধবার ভেটেরিনারি হাসপাতালে আসেন সদকী ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামের মিতু খাতুন। তিনি জানান, তাঁর ছাগলটিকে কুকুর কামড় দিয়েছে। হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই। চিকিৎসক লিখে দিলে বাইরে থেকে কিনবেন। 

যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের আম্বিয়া খাতুন বলেন, ছাগলটিকেও কুকুর কামড়ালে মঙ্গলবার হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ভ্যাকসিন নেই। বাইরের ফার্মেসি থেকে ৩০০ টাকায় ভ্যাকসিন কিনেছেন তিনি। 

কলেজশিক্ষক আরিফুজ্জামানের বাড়িতে ৭টি গরু আছে। গরুগুলো ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে ভ্যাকসিনের জন্য গিয়ে পাননি। পরে বাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকার ভ্যাকসিন কিনেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, এক মাস হাসপাতালে কোনো ভ্যাকসিন নেই। অনেকেই এসে ফিরে যাচ্ছেন। চলমান পরিস্থিতির কারণে ভ্যাকসিন আসতে দেরি হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম জানান, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ চলছে। খুব দ্রুতই হাসপাতালে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে। 
 

আরও পড়ুন

×