ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনায় নাখোশ সাংস্কৃতিককর্মীরা

জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনায় নাখোশ সাংস্কৃতিককর্মীরা

রাজশাহীতে প্রথিতযশা চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি সমকাল

 রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৪ | ০০:২৩

রাজশাহীতে চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের গুঁড়িয়ে দেওয়া পৈতৃক বাড়ির জায়গায় দ্রুতই একটি উন্মুক্ত মঞ্চ ও গ্রন্থাগার করে দেবে জেলা প্রশাসন। পরে হবে ‘ঋত্বিক ঘটক কমপ্লেক্স’। বাড়ির একটি অংশ দেওয়া হবে সংস্কৃতিকর্মীদের এবং বাকি অংশ ব্যবহার করবে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ। 
ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া‌র ঘটনা তদন্তকারী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মহিনুল হাসান গতকাল বৃহস্পতিবার এ কথা জানান। 
তবে জেলা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে নাখোশ রাজশাহীর সংস্কৃতিকর্মীরা। তারা বলেন, বাড়ির একটি অংশ রেখে, বাকি অংশ কলেজকে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি আগের মতোই। এতে আবারও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংস্কৃতিকর্মীদের বিবাদ তৈরি হবে। হোমিও কলেজ ভবন ছাড়া ওই বাড়ির বাকি অংশ সীমানা প্রাচীর তৈরি করে সংস্কৃতিচর্চার জন্য দেওয়ার দাবি জানান তারা। 
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরদিন অর্থাৎ ৬ আগস্ট রাতে কিছু দুর্বৃত্ত ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়। পুরোনো ইটের স্তূপ ছাড়া সেখানে আর কিছু নেই। উঁচু দেয়াল থাকায় বাড়ি ভাঙার ঘটনাটি কারও চোখে পড়েনি। ১৩ আগস্ট রাতে এটি জানাজানি হয়। এর পর রাজশাহীর সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীরা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। 
বাড়িটি ভাঙার সময় কলেজ কর্তৃপক্ষের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। চলচ্চিত্র কর্মীদের অভিযোগ, ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভাঙার সঙ্গে কলেজ প্রশাসন জড়িত। সে কারণে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করা হয়েছিল। 
‘ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি রাজশাহী’র সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন মাসুদ সমকালকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসন আমাদের একটি অংশ দিতে চায় এবং বাকিটুকু কলেজ ব্যবহার করবে। বিষয়টি আগের মতোই রয়ে গেল। এটি নিয়ে আবার আমাদের সঙ্গে কলেজের দ্বন্দ্ব লাগবে। তাই আমরা এটা চাই না।’ কলেজের সঙ্গে বিরোধ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কলেজ ভবন বাদে বাকি অংশ সীমানা প্রাচীর দিয়ে আমরা ব্যবহার করতে চাই। এ দাবি আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে ধরব।’ 
তিনি বলেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছে, সন্ধ্যার সময় কিছু লোক ঢুকে বাড়িটি ভেঙেছে। সেটা পরীক্ষার জন্য তাদের কাছ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ এনে দেখেছি, সেদিন দুপুর ১২টা থেকে ক্যামেরা বন্ধ ছিল। পরিকল্পিতভাবে কাজটি করা হয়েছে।’ হামলাকারীরা কলেজ ভবনে আঁচড় দেয়নি এবং সব ক্যামেরা অক্ষত রয়েছে বলে জানান তিনি। 
সংস্কৃতিকর্মীদের দাবির ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি হোমিও কলেজের অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান। তবে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটা যে কোনো সময় বন্ধ হতে পারে। কারেন্ট না থাকার কারণেও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমি এ বিষয়ে খুব বেশি বুঝিও না।’
অধ্যক্ষ জানান, ৬ আগস্ট রাত ৮টার পর তিনি ঘটনাস্থলে আসেন এবং কিছু লোককে বাড়িটি ভাঙতে দেখেন। তারা শ্রমিক বলে পরিচয় দেন। বাড়িটি ভাঙার জন্য কিছু ছেলে টাকা দিয়েছে বলেও জানান। কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বাড়িটি ভাঙার অভিযোগ অস্বীকার করেন অধ্যক্ষ আনিসুর। 

আরও পড়ুন

×