ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

শিক্ষার্থী নির্যাতন

কুমেকে শাস্তি পেল ‘ছাত্রলীগ’ সমর্থক ১০ শির্ক্ষার্থী

কুমেকে শাস্তি পেল ‘ছাত্রলীগ’ সমর্থক ১০ শির্ক্ষার্থী

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটক। ছবি: সমকাল

কুমিল্লা প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৩২ | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৩৪

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে (কুমেক) একাধিক শিক্ষার্থীকে মারধর ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর ‘ছাত্রলীগ’ সমর্থক ১০ ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একজনকে আজীবনের জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

শিক্ষার্থী নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ওই শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আজ বুধবার সমকালকে নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মির্জ্জা মুহাম্মদ তাইয়েবুল ইসলাম। তবে শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা বিষয়টি অতি তুচ্ছ এবং এখানে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন। যদিও অধ্যক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন মেযাদে শাস্তি পাওয়া ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা হলেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ২৫তম ব্যাচের হৃদয় রঞ্জন নাথ ও আনোয়ার হোসেন, ২৭তম ব্যাচের শহিদুল ইসলাম, জয় সরকার ও সামিউল হক, ২৮তম ব্যাচের শাইখ আবেদিন, তালুকদার মো. ফারহান ও তাহসিনুল হক, ৩০তম ব্যাচের আফ্রিদি ইসলাম ও ৩১তম ব্যাচের ইয়াসির জোনায়েদ। এর মধ্যে ২৫তম ব্যাচের হৃদয় রঞ্জন নাথকে ক্যাম্পাসে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টায় মেডিকেল কলেজের গেটে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হৃদয় রঞ্জন নাথের নেতৃত্বে ২৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুজাহিদ ত্বহাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। একইসঙ্গে আরেক শিক্ষার্থী আবদুল মান্নানকেও হেনস্তা করা হয়। পরে তাদের শিবিরের নেতাকর্মী বলে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ ঘটনার পর ৩ মার্চ আবদুল মান্নানের মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে হাতবোমা দিয়ে মান্নানকে বিস্ফোরক মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও গত ৯ মার্চ কলেজ ক্যাম্পাসে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। 

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকায় দীর্ঘদিন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী সমকালকে বলেন, একটি তুচ্ছু ঘটনার রেশ ধরে অনেক মাস পর এসে আমাদের উপর শাস্তি চাপিয়ে দেওয়া দুঃখজনক। আমরা আশা করি, কলেজ কর্তৃপক্ষ মানবিক কারণে বিষয়টি বিবেচনা করবে। 

কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মির্জ্জা মুহাম্মদ তাইয়েবুল ইসলাম সমকালকে বলেন, গত সোমবার সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী, ওই দিনই ১০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করার পরই এ পদক্ষেপ নেওয়া এবং এই শাস্তি অবিলম্বে কার্যকর হবে। 

তিনি আরও বলেন, এ শাস্তির পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ নেই। সবাই আমাদের ছাত্র। শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণের পরই তাদের শান্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×