বনভূমি উদ্ধারে গিয়ে হামলায় এসিল্যান্ডসহ আহত ১০

গাজীপুরের শ্রীপুরে ইজ্জতপুর বাজার এলাকায় বনভূমি উদ্ধার অভিযানে গেলে মঙ্গলবার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায় ভূমিদস্যুরা- সমকাল
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ০০:২৪
গাজীপুরে বনভূমি উদ্ধারে গিয়ে ভূমিদস্যুদের হামলায় উপজেলা সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় তিনটি গাড়ি ও দুটি এক্সক্যাভেটর ভাঙচুর করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলার শ্রীপুরের রাজাবাড়ি ইউনিয়নের কাফিলাতলী ও ইজ্জতপুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জবর দখল করে নেওয়া বনভূমি উদ্ধার করতে গিয়ে ভূমিদস্যুদের তাণ্ডবে নাস্তানাবুদ হন ইউএনও, এসিল্যান্ড, এসিএফসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের ১৮ বিঘা বনভূমি উদ্ধার করে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ভূমিদস্যুরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করে। ছুড়তে থাকে ইটপাটকেল। এ সময় গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
বনবিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্টের পর ওই এলাকায় বনভূমি জবর দখলের মহোৎসবে মেতে উঠে ভূমিদস্যুরা। কাফিলাতলী-ইজ্জতপুর ও এর আশপাশের শত শত বিঘা বনভূমি দখল করে নেয় তারা। রাতারাতি স্থাপনা নির্মাণও করে ফেলে। জবর দখল হওয়া এসব বনভূমি উদ্ধারে অভিযানে নামে বনবিভাগ।
ঢাকা বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শামসুল আরেফীন জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই এলাকায় তারা অভিযান শুরু করেন। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা জমি উদ্ধারে তাদের সহযোগিতা করেন। প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের ১৮ বিঘা জমি উদ্ধার করে তারা ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় কয়েকজন ভূমিদস্যু তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। ইউএনওর গাড়িতে হামলা চালায়। ইউএনওর গাড়িসহ তিনটি গাড়ি ও দু’টি এক্সক্যাভেটর ভাঙচুর করে তারা। তিনি বলেন, পুরাতন কোনো স্থাপনায় অভিযান চালানো হয়নি। নতুন করে গড়ে তোলা ১২০টি স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও সজীব আহমেদ জানান, হামলাকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল। তাঁকে (সজীব) রক্ষা করতে গিয়ে তিনি আহত হয়েছেন। তাঁর বুকের মাঝখানে ইটের আঘাত লেগেছে। এ ছাড়া আহত হন তাঁর (সজীব) গাড়ি চালক আবু হানিফ, স্টাফ আরফান আলী, আশিকুর রহমান, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তার গাড়ি চালক লিটন, এক্সক্যাভেটর অপারেটর রাসেল আহমেদ ও হাকিমুল্লাহসহ অন্তত ১০ জন। এ সময় পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার দিকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে ওই এলাকায়। এ ঘটনায় দুই হামলাকারীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ইউএনও আরও বলেন, এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া বন বিভাগও পৃথক একটি মামলা করবে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, এ রকম অভিযান চালানোর কথা আগেই জানানো উচিত ছিল। কোনো নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ অভিযানটি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
তবে অভিযোগটি অস্বীকার করে সহকারী বনসংরক্ষক বলেন, প্রত্যেককে নোটিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর যেসব স্থাপনা তৈরি হয়েছে, সেগুলোই উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
- বিষয় :
- বনভূমি দখল