শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্যসহ ৫ জনের পদত্যাগ

চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮:২১ | আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮:২৩
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেনসহ পাঁচজন শিক্ষক। পদত্যাগ করা অন্যরা হলেন- উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী শামীম সুলতানা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. তৌফিক সাঈদ, ছাত্রকল্যাণ ও এইচআর পরিচালক খুরশিদুর রহমান এবং প্রক্টর আহমদ রাজিব।
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ইফতেখার মনির। এদের মধ্যে ড. অনুপম সেন বার্ধক্যজনিত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ইফতেখার মনির বলেন, উপাচার্য অনুপম সেন বার্ধক্যজনিত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। এছাড়া ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেছেন। বৈষম্যবিরোধী প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে উপাচার্য ড. অনুপম সেনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার আন্দোলন-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে গত বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ক্যাম্পাসেই তালা ঝুলিয়ে দিয়ে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে। অভিযুক্ত সবাই পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ছাত্রদের তোপের মুখে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগে বাধ্য হন অনুপম সেনসহ পাঁচজন।
এদিকে, একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজ বিজ্ঞানী সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. অনুপম সেন এর এমন পদত্যাগের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নানা শ্রেণি পেশার মানুষরা। সরকার পতনের পরও তার মতো এমন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এমন আচরণকে ন্যাক্কারজনক বলেও আখ্যায়িত করেছেন কেউ কেউ।
ড. অনুপম সেনের বিবৃতি
পদত্যাগের আগে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন বলেন, ‘যেসব ছাত্র আমার পদত্যাগ চেয়েছে, তাদের আমি জানাতে চাই, আমি সারা জীবন বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি। ছাত্রদের যেমন সমানভাবে দেখেছি, তেমনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও সম্মানজনকভাবে ব্যবহার করেছি। কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেছি, এমনটি মনে পড়ে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কতিপয় ব্যক্তি গত কয়েক বছরে যেভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হচ্ছিল, তা আমাকে প্রচণ্ড ব্যথিত করেছিল, আঘাত করেছিল। এ জন্যই আমি আওয়ামী লীগের গত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে যাইনি। আমি সিআরবি রক্ষার জন্য যে আন্দোলন করেছিলাম, সেই আন্দোলন ছিল সম্পূর্ণভাবে সরকারের অভিপ্রায়বিরোধী। আমি বেতন ও ভাতার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে এক পয়সা অর্থ অনৈতিকভাবে গ্রহণ করিনি। আমি এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় কোনো দুর্নীতি, অন্যায় ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিইনি। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকি বা না থাকি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল কামনা করব মৃত্যুর দিন পর্যন্ত।’
- বিষয় :
- চট্টগ্রাম
- শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
- পদত্যাগ