শহীদ কারারক্ষী মোবারক ও মৈধরকে মনে রাখেনি কেউ

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে মৈধর আলী ও মোবারক আলী খাঁ স্মৃতিস্তম্ভ সমকাল
আহমেদ কুতুব, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩:৩০
চট্টগ্রামে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ দুই কারারক্ষী মৈধর আলী ও মোবারক আলী খাঁ। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে শহীদ হন তারা। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশেই তাদের দাফন করা হয়। এখনও দুই শহীদের সমাধি সেখানে আছে। তবে নিজ বাহিনীই যেন বেমালুম ভুলে গেছে এ দুই শহীদ কারারক্ষীর আত্মদান। প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস আসে, কিন্তু শ্রদ্ধার ফুলটুকুও পান না তারা। এ বছরও বিজয় দিবসে তার ব্যতিক্রম হয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, কারাগারের মূল ফটকের পাশে একটি স্মৃতিফলক থাকলেও আবর্জনা এবং জঙ্গলে পরিপূর্ণ দুই শহীদের সমাধি। ফলকের এক পাশে সবজিও চাষ করতে দেখা গেছে। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম কারাগারের দুই কারারক্ষী শহীদ হয়েছেন। তাদের স্মরণে একটি স্মৃতিফলক আছে জানি। কিন্তু রেওয়াজ না থাকায় তাদের স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধা জানানো হয়নি। আগেও কেউ তাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানায়নি।
তবে চট্টগ্রাম বিভাগের এক কারা কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ মুক্তিযুদ্ধের দুই শহীদ কারারক্ষীকে শ্রদ্ধা ও সম্মান না জানিয়ে অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে। অথচ সেনা, পুলিশসহ অন্য বাহিনী ঠিকই তাদের সূর্যসন্তানদের যথাযথ সম্মান জানায়।
মৈধর আলীর ছেলে আবদুল জলিল বলেন, ‘আমার বাবাকে কারা কর্তৃপক্ষ কখনও যথাযথ সম্মান দেয়নি। এটা আমাদের জন্য যেমন কষ্টের, তেমনি কারা বিভাগের জন্যও বিষয়টি লজ্জাজনক। বাবা ও আরেকজন কারারক্ষীর স্মৃতিফলকটিও নামমাত্র কয়েকটি ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালে তৎকালীন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক দুই শহীদের সমাধির স্মৃতিফলকটির স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ওই সময় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলামকে ফোন করে তিনি দুই শহীদ কারারক্ষী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাঠানোর নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। পরে সেই উদ্যোগ লাল ফিতায় বন্দি হয়ে যায়।
- বিষয় :
- শহীদ পরিবার