চিন্ময়কাণ্ডে বিচার বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ, কমিটি প্রধানের অব্যাহতি

ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২১:০১
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে হতাহতের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধানের পদ ছেড়েছেন সাবেক মহানগর কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে জেলা জজ পদমর্যাদার কাউকে দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার সুপারিশ করেছেন তিনি। এই ঘটনায় বিচারিক ক্রটি, প্রিজনভ্যানে পুলিশের মাইক আসামির ব্যবহার, সরকারি কর্মচারী জড়িত থাকা, ত্রিশূল নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশসহ একাধিক বিষয় তুলে ধরেছেন।
আইনজীবী সমিতি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধানের আগেই কমিটির সদস্য সচিব ও সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক কাশেম কামালসহ চারজন অব্যাহতি নেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান আবদুস সাত্তার বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ৬টি মামলা হয়েছে। পুলিশ তার তদন্ত করছে। আমরা শতভাগ নিরপেক্ষ তদন্ত করলেও তা নিয়ে কেউ না কেউ প্রশ্ন তুলবেন। ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে চাইবেন। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে জেলা জজ পদমর্যাদার কাউকে দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার সুপারিশ করে আমি অব্যাহতি নিয়েছি। ১৮ ডিসেম্বর বার তা গ্রহণ করেছেন।
আবদুস সাত্তার আরও বলেন, সমিতির পক্ষ থেকে ১০ নভেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১৫ নভেম্বর প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এর মধ্যে সদস্য সচিবসহ চারজন পদত্যাগ করেছেন। এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকতে পারেন। পুলিশের মাইক দিয়ে প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায় চিন্ময় বক্তব্য দিয়েছিলেন। ১ ঘণ্টার মধ্যে মামলার নকল নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্বাভাবিক নিয়মে নকল পেতে তিন দিন লাগে। ত্রিশূল নিয়ে আদালতে এসেছেন। বিচারিক ক্রটি রয়েছে। এমন অবস্থায় এ ঘটনা সাধারণ কেউ তদন্ত করা উচিত হবে না বলে মনে করেছি।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক বলেন, তদন্ত দলের চারজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। অন্য কোনো কিছু আমার জানা নাই। কোনো কাগজপত্র পাইনি। আজ আইনজীবী সমিতি অফিসে গিয়ে বিষয়টি দেখব।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে গত ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ হয়। আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়েছে। পুলিশ এসব মামলা তদন্ত করছে।