ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

বোরো ধানের চারা কুড়িয়ে কাটছে শীতের ছুটি

বোরো ধানের চারা কুড়িয়ে কাটছে শীতের ছুটি

তাহিরপুরে শনির হাওরপারে ধানের চারা সংগ্রহে ব্যস্ত শিশুরা সমকাল

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩:০৪

হাওরবেষ্টিত তাহিরপুরে বোরো ধানের চারা কুড়ানোর আনন্দে শীতের ছুটি কাটছে শিশুদের। প্রতি বছর বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয় শীতের ছুটি। এ সময় হাওরপারের শিশুরা আনন্দ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বোরো ধানের হালিচারা কুড়ায় জমিতে।
প্রতি বছরই শীতের আমেজ মেখে বোরো ধান রোপণের মৌসুম আসে। এ সময় সেখানকার বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা শেষে ছুটির আনন্দে মাতে শিশুরা। এই প্রান্তিক অঞ্চলের শিশুরা তাদের ছুটি উপভোগ করে বাবা-মায়ের সঙ্গে পরিবারের নানা কাজে অংশ নিয়ে। এর মধ্যে তাদের সবচেয়ে আনন্দের উপলক্ষটি আসে জমি থেকে বোরো ধানের হালিচারা কুড়ানোর সময়। পরিবারের সদস্যরা এ সময় শিশুদের পরিবারের কাজে অনুপ্রাণিত করতে বড়রা চারা কুড়ানোর কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে হাত খরচের টাকা দেন।
হাওরাঞ্চলে বোরো ধানের চারা সংগ্রহের কাজ শুরু হয় শীতের প্রথম দিক থেকেই। চলে মৌসুমের মাঝামাঝি পর্যন্ত। 
শনিবার সকালে শনির হাওরপারে গিয়ে দেখা যায়, জমিতে বোর ধানের হালিচারা কুড়াতে ব্যস্ত অনেক শিশু। পরিবারের সঙ্গে এই কাজ করে তারা দারুণ আনন্দ পায়।
তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম, নবম শ্রেণির ছাত্র তাহসিন আহমেদ, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া নিদুল হাসানসহ অন্যরা জানায়, বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। শীতের শুরুতেই প্রতি বছর বার্ষিক পরীক্ষা শেষে লম্বা ছুটি পায় তারা। এ সময় পরিবারের নানা কাজে বাবা-মায়ের সহযোগী হয় তারা। শিশিরভেজা সকালে বিস্তীর্ণ ধানের জমিতে বোরোর হালিচারা কুড়াতে তাদের দারুণ ভালো লাগে। অনেক শিশু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একযোগে মাঠে কাজ করে এ সময়। তাদের কাজের বিনিময়ে মা-বাবার কাছ থেকে শখের পারিশ্রমিক পায় তারা।
এই শিশুরা জানায়, প্রতি বছর এ সময় তারা চারা কুড়ানোর কাজ করে আনন্দ নিয়ে। সেই সঙ্গে তাদের জন্য বাবা-মা কতটা কষ্ট করেন, ফসলের মাঠে কাজ করে তা বুঝতে পারে তারা।
শিশুরা জানায়, এবার হালিচারার জমি উঁচু না হওয়ায় চারা কুড়াতে বেশ কষ্ট হয়েছে। তবে তারা সেটা উপভোগ করেছে। নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো থেকে অনেক শিশু সেই কাজটি করে সংসারের জন্য বাড়তি আয়ের আশায়। এমন অনেক শিশু অন্যের জমিতে ধানের চারা কুড়ানোর কাজ করে আয় করে। প্রতি আঁটির জন্য তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয় ৫ টাকা করে।
প্রতিদিন এই শিশুরা ৫০টির মতো করে চারার আঁটি সংগ্রহ করতে পারে। এতে প্রতিদিন তারা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে আয় করতে পারে।
শনির হাওরপারের ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক সুনীল দাস জানান, বোরো মৌসুমে একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি যা করতে পারেন, অনেক ক্ষেত্রে শিশুরাও 
তা করেত পারে। তারা আনন্দ নিয়ে এই কাজটি করে। এতে পরিবারের 
সঙ্গে তাদের বোঝাপড়া আরও ভালো হয়। পাশাপাশি কৃষি কাজের প্রাথমিক দীক্ষাটা মাঠেই পায় এই শিশুরা।

আরও পড়ুন

×