গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময়
সাংবাদিকদের ক্ষতিপূরণের দাবি যৌক্তিক, ন্যায্য

ছবি: সমকাল
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৯:৩৩
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এবং রাজনৈতিক কারণে যারা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন সেসব সাংবাদিকের ক্ষতিপূরণের প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণের দাবিটাও যৌক্তিক এবং ন্যায্য। একইভাবে হয়রানিমূলক মামলায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, জেল খেটেছেন, দিনের পর দিন কাজ করতে পারেননি, তাদের মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বলা দরকার।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন কমিশন প্রধান। সভায় সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পাশাপাশি জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সুপারিশ তুলে ধরেন সাংবাদিকরা।
সভায় কামাল আহমেদ বলেন, পেশার জন্য রাজনৈতিক দলবাজি বন্ধ করা দরকার। কারণ সাংবাদিকতা এবং দলীয় রাজনীতির আদর্শ থেকে খবর সেন্সর করা অথবা বিকৃত করা এগুলো সাংবাদিকতাকে প্রভাবিত করছে। আমরা সম্পাদক পরিষদকে বলেছি, আসলে একটা জাতীয় নীতিমালা হওয়া দরকার। আপনারা একটা মান নির্ধারণ করেন যে এই ন্যূনতম মান আমাদের মেনে চলা দরকার। আশা করছি সম্পাদক পরিষদ সেই উদ্যোগটা নেবেন।
তিনি বলেন, ‘হকার্সদের পত্রিকা বিক্রির হিসেবের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। ঢাকা শহর থেকে ৩০২টি পত্রিকা মিডিয়া লিস্টে আছে, সারা দেশে ৫৯২টির মতো পত্রিকা আছে। কিন্তু আমরা হকারদের তালিকায় দেখেছি, ৪৬টি কাগজ তারা লেনদেন করে। বাকি কাগজগুলোর কোনো নথি নেই। কেউ নেয় না ওই কাগজ। তাহলে এটা সরকারের মিডিয়া লিস্টিং এর মধ্যে ঢুকলো কি করে? এসব সমস্যার সমাধান জরুরি।’
ডিএফপির পত্রিকার প্রচারসংখ্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পত্রিকার প্রচারসংখ্যার দিক থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের একার নামেই চারটি পত্রিকার ডিক্লারেশন ছিল। একটি পত্রিকার সার্কুলেশন যেটা ৬ হাজারেরও কম সেটাকে তিনি ২ লাখ ৯৯ হাজার দেখিয়েছেন, দেখাতে বাধ্য করেছেন।’
কামাল আহমেদ বলেন, ‘দেশে ৪৬টি টেলিভিশন চলার মতো বাজার নেই। তারপরেও ৪৬টি টেলিভিশনকে সরকার অনুমতি দিয়েছে। যেহেতু বাজার নেই, সেহেতু তারা আয়ও করতে পারে না। আবার নিয়োগ দেয় বিনা বেতনে, কার্ডের ব্যবসায় চলে যায়। এগুলো ভেঙে শৃঙ্খলা আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একটা যৌক্তিক সমাধান হতে পারে, সারাদেশে সাংবাদিকদের জন্য একটা ভালো ন্যূনতম বেতনের ব্যবস্থা রাখা। যে শহরে খরচ বেশি, বিশেষ করে ঢাকা আলাদা করে একটা ভাতা বা বাড়তি বেতন দিতে হবে। এই ধরনের সমাধানগুলো আমরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করছি। সেটার ভিত্তিতেই আমরা সুপারিশমালা তৈরি করবো। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকেও লিখিত সুপারিশ চেয়েছি।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান। সভায় জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক, টেলিভিশন ও অনলাইনে কর্মরত সম্পাদক, প্রকাশকসহ চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা নানা পরামর্শ, মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন।
- বিষয় :
- চট্টগ্রাম
- গণমাধ্যম
- মতবিনিময় সভা