ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ধরন পাল্টেছে নিউমোনিয়া ডায়রিয়াও ভোগাচ্ছে

ধরন পাল্টেছে নিউমোনিয়া ডায়রিয়াও ভোগাচ্ছে

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর ভিড় সমকাল

 ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ০০:১৬

ময়মনসিংহের শম্বুগঞ্জ থেকে চার বছরের শিশু ইব্রাহিমকে নিয়ে তিন দিন ধরে মেঝেতে বিছানা পেতে সন্তানের সুস্থতার প্রহর গুনছেন বাবু মিয়া। ঠান্ডা কাশিতো আছেই, সেই সঙ্গে দেখা দেয় ডায়রিয়া আর বমি। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করেন ইব্রাহিমকে। তিন দিন পর চোখ মেললেও শরীর এখনও দুর্বল। 
ইব্রাহিমের মতো কয়েকশ শিশু ঠান্ডা জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে।
ময়মনসিংহে শীতের তীব্রতার সঙ্গে হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বেড়েছে শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রকোপ। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, বেশির ভাগ নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ থাকছে না, তাই চিকিৎসা দিতে গিয়ে বেগ পেতে হয়। 
এদিকে শিশু ওয়ার্ডে ৭২ শয্যার বিপরীতে ভর্তি থাকে তিন থেকে চার গুণ রোগী। অতিরিক্ত রোগীকে সেবা দিতে প্রায়ই হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকসহ নার্সদের।
ময়মনসিংহে পুরোপুরি জেঁকে বসেছে শীত। সকালে হিমেল হাওয়া এবং রাতে ঘন কুয়াশায় হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু জনজীবন। তাই বাড়ছে শীতজনিত রোগ। এই শীতে বেশি বিপাকে রয়েছে শিশু ও বয়স্ক লোকজন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিড় করছেন বিভিন্ন জেলা-উপজেলার রোগীরা। এসব রোগীর শরীরে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, খিচুনির মতো উপসর্গ রয়েছে। শিশু সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন স্বজনরা। কখন সুস্থ হবে সন্তান আর কখন ফিরতে পারবেন বাড়িতে।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যান্যবারের থেকে এবার নিউমোনিয়ার ধরন বদলেছে। প্রথম দিকে নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা 
না গেলেও পরে হঠাৎ করেই তা তীব্র আকার 
ধারণ করছে। তাই গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে 
সবসময় শিশু ও নবজাতকের সঠিক তাপমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে অভিভাবকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পেড্রিয়াটিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, শহরের তুলনায় গ্রামে শীতের প্রকোপ বেশি। শিশুর ঠান্ডা জ্বর হলে স্বাভাবিকভাবে পাশের ফার্মেসি থেকে ঠান্ডা জ্বরের ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। অভিভাবকরা হয়তো ভাবছেন দু-এক দিনে সেরে যাবে। কিন্তু হঠাৎ করেই তীব্র শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য জটিলতায় তীব্র আকার ধারণ করছে নিউমোনিয়া। এমন অবস্থায় হাসপাতালে আসতে দেরি হলে ঘটে বিপদ, চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তার পরও রোগীকে সুস্থ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়। তাঁর দাবি, নিউমোনিয়ার পাশাপাশি বেড়েছে ডায়রিয়াও। শিশু ওয়ার্ডে ৭২টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি থাকে ৪০০ থেকে ৪৫০ রোগী। প্রায় সময় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকসহ নার্সদের।

আরও পড়ুন

×