হত্যারচেষ্টা মামলায় ছাত্রসহ দু’জনকে ফাঁসানোর অভিযোগ

ইয়ামিন প্রধান
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ০০:৪২
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার এক বিএনপি নেতা ও একই দলের অপর এক নেতার কলেজপড়ুয়া ছেলেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হত্যাচেষ্টার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
রাজধানীর রামপুরা থানায় ২৩ সেপ্টেম্বর ওই মামলাটি করেন সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি রাজধানীর বনশ্রীতে থাকতেন। গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বনশ্রী হাসপাতালের সামনের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
মামলায় ৩৯ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়। প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া আসামি তালিকায় রয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের নামও। এ মামলার ৯ নম্বর আসামি রূপগঞ্জের তারাব পৌর বিএনপির সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া। ২৫ নম্বর আসামি তাঁর প্রতিবেশী ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল বারেকের ছেলে ইয়ামিন প্রধান।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল বারেক বলেন, তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকলেও ছেলে কোনো দলেই যুক্ত নয়। তাঁর ভাষ্য, ‘আমার ছেলে রূপগঞ্জের সরকারি মুড়াপাড়া কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। সে কোনো রাজনীতি বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত নয়। আন্দোলনে আমি বা আমার পরিবারের কেউ পক্ষে বা বিপক্ষে কোনোটাতেই ছিলাম না। মামলায় আসামি হওয়ার পর থেকে আতঙ্কে আমার ছেলে বাড়িছাড়া। আমরাও ভয়ে আছি। কী কারণে একজন অচেনা লোক আমার ছেলেকে আসামি করল, তা বুঝতে পারছি না।’
মামলার অপর আসামি জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল বারেকের দাবি, তারা বাদিকে চেনেন না। কখনও নাম পর্যন্ত শোনেননি। মামলার পর পুলিশ তাদের খোঁজখবর নিতে বাড়িতে এলে বিষয়টি জানতে পারেন। পরে আদালতের মাধ্যমে কাগজপত্র সংগ্রহ করে বাদীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেন। কিন্তু অসুস্থতার অজুহাত দিয়ে কোনো কথা বলেননি বাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ ঘটনার পেছনে অন্য কারও ইন্ধন আছে কিনা, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত নন তারা।
মামলার এজাহারে দেওয়া বাদী আব্দুল্লাহ আল মামুনের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে সমকালের পরিচয় দেওয়া হলে তিনি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। পরে ‘এখন ব্যস্ত, পরে কথা বলব’ জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ বিষয়ে কথা হয় রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান আকন্দের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারাদেশেই (এমন) অভিযোগ উঠেছে। অনেককে মিথ্যা অভিযোগে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মামলাগুলোর সঠিক তদন্ত ও নিরপরাধ ব্যক্তির হয়রানি ঠেকাতে প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনাও আছে। পুলিশ সেভাবেই কাজ করছে।
ওসি আতাউর রহমান আরও বলেন, ‘মামলা যে কারও নামেই হতে পারে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে যদি তথ্য-প্রমাণ না মেলে, সে ক্ষেত্রে নাম চার্জশিটে থাকবে না। তা ছাড়া শুধু মামলায় নাম থাকার কারণে আমরা কাউকে হয়রানিও করছি না।’
- বিষয় :
- হত্যাচেষ্টা