ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

বোতলজাত পানিতে আয়ের তুলনায় ব্যয় দ্বিগুণ

খুলনা ওয়াসা

বোতলজাত পানিতে আয়ের তুলনায় ব্যয় দ্বিগুণ

ফাইল ছবি

 মামুন রেজা, খুলনা

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫ | ০০:৩৮

খুলনা ওয়াসার বোতলজাত পানির প্লান্টে বার্ষিক আয়ের তুলনায় ব্যয় দ্বিগুণের বেশি। গত ৫ বছরে এ প্লান্ট থেকে আয় হয়েছে ১ কোটি ২২ হাজার টাকা; ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ টাকা। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত খুলনা ওয়াসার কর্মকর্তারা। বিকল্প কী করা যায়, ভাবছেন তারা।
খুলনা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় নগরীর রায়েরমহল এলাকায় বোতল ওয়াটার প্লান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এর নির্মাণকাজ শুরু; শেষ হয় ২০১৯ সালের জুনে। ব্যয় হয় ১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর এই প্লান্টে পানি উৎপাদন শুরু হয়। ‘সুন্দরবন পিওর ড্রিংকিং ওয়াটার’ নামের প্লান্টে ৩০০ মিলিলিটার, ৫০০ মিলিলিটার, ১ লিটার, ২ লিটার, ৩ লিটার ও ৫ লিটার বোতলে পানি উৎপাদন করা হয়ে থাকে। প্লান্ট থেকে সরাসরি ডিলাররা পানি কিনে নিয়ে যান। গ্রাহকরা চাহিদা দিলে গাড়িতে করে তাদের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয় পানি। 
২০২০-২১ অর্থবছরে আয় হয় ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। পরিচালনায় ব্যয় হয় ২৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে আয় হয় ১৩ লাখ ৮১ হাজার টাকা; ব্যয় হয় ৩৬ লাখ ২ হাজার টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয় হয় ২৯ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও ব্যয় হয় ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আয় হয় ৩৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা ও ব্যয় হয় ৭০ লাখ ৭২ হাজার টাকা। সবশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে (প্রথম ছয় মাসে) আয় হয় ১৪ লাখ ১ হাজার টাকা; ব্যয় হয় ৩৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ গত ৫ বছরে উৎপাদিত বোতল পানি বিক্রি করে আয় হয়েছে ১ কোটি ২২ হাজার ১৮৫ টাকা। আর উৎপাদন ও ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন খাতে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৪ টাকা। লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ১৪ হাজার ৪০৯ টাকা। 
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব বাবুল হাওলাদার বলেন, যেখানে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো লাভ করছে, সেখানে এ প্রতিষ্ঠানের লোকসানের কারণ কী? ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণেই মূলত লোকসান হচ্ছে বলে আমাদের ধারণা। 
খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, অব্যবস্থাপনা, মনিটরিংয়ের অভাব ও উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটি লোকসান দিচ্ছে। লোকসান বন্ধে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। 
জানতে চাইলে খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হুসাইন শওকত বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর বিষয়টি আমারও নজরে এসেছে। উৎপাদন ব্যয় কমাতে উদ্যোগ নিচ্ছি। এ ছাড়া অতিরিক্ত জনবল আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখব।

আরও পড়ুন

×