কলেজের পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পতাকার খুঁটিতে জুতা ঝুলিয়ে ইমামকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ সমকাল
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫ | ০১:১০
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের মসজিদের ইমামকে অব্যাহতি দেওয়ায় জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহর অনুসারীরা। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর নগরীর ধর্মপুরে কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, জুমার নামাজের আগে মসজিদের মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন কলেজ এলাকার গণ্যমান্য লোকজন। তারা বলেন, ইমামকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধ কাম্য নয়। তারা এলাকায় পরিচিত নন এমন নতুন ইমাম নিয়োগের দাবি জানান। এ সময় কিছু যুবক উত্তেজিত হয়ে বের হয়ে যান। পরে ১০-১২ জন যুবক কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা জাতীয় পতাকার তিনটি স্ট্যান্ডের মধ্যে মাঝের স্ট্যান্ডের সামনে গিয়ে বিভিন্ন অশালীন স্লোগান দিয়ে পতাকার জন্য রাখা রশিতে জুতা ঝুলিয়ে দেন।
কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, যারা এ কাজ করেছে তারা অব্যাহতি পাওয়া ইমামের লোকজন। কলেজের ইমাম নিয়ে বিরোধে কেন জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা ঝুলিয়ে দেওয়া হলো? যারা এ কাজ করেছে, তারা সবাই স্থানীয়। কলেজ প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কলেজ প্রশাসন আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি কলেজ থেকে চলে এসেছি। এখন কলেজ ক্যাম্পাসে কী ঘটনা ঘটেছে, কারা ঘটিয়েছে, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঞা সমকালকে জানান, জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ। এ কাজ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মহিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এ বিষয়ে এখনও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ১৩ জানুয়ারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষ মাওলানা সাদ ও জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরে গত ২০ জানুয়ারি তাবলিগের সাপ্তাহিক তালিম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ২১ জানুয়ারি অধ্যক্ষকে তাঁর কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন ইমাম মারুফ বিল্লাহর অনুসারীরা। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইমাম মারুফ বিল্লাহকে নানা অভিযোগ তুলে অব্যাহতি দেয় কলেজ প্রশাসন। পরে একাধিকবার কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন ওই ইমামের অনুসারীরা। ইমামকে চাকরিচ্যুত করার পর থেকেই প্রতি শুক্রবার নামাজের আগ মুহূর্তে ইমামকে বহালের দাবি করে আসছে স্থানীয় একটি পক্ষ। সর্বশেষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কলেজে নামাজ শুরুর আগেই স্থানীয়রা কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের ওপর হামলা করে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধার করে।
- বিষয় :
- পতাকা