কালিয়াকৈর ও টঙ্গীতে শ্রমিক বিক্ষোভ
দুই বন্ধ কারখানা খোলার দাবি, মহাসড়ক অবরোধ

ছবি: সমকাল
গাজীপুর, কালিয়াকৈর ও টঙ্গী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৫ | ২১:৩৫
ঈদের আগে কালিয়াকৈর ও টঙ্গীতে দুটি বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুরে দুই মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শত শত শ্রমিক। এ সময় গাজীপুরের বাসন থানার কড্ডা এলাকায় ১০টি, কালিয়াকৈরের মৌচাক শিল্পাঞ্চলে ১৫টি ও টঙ্গীতে কয়েকটি পোশাক কারখানা এক দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এর আগে গাজীপুর মহানগরের বাসন, কড্ডা, কালিয়াকৈর ও টঙ্গী এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবি এবং শ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এ সময় দুই মহাসড়কে কয়েক ঘণ্টা দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে বাসন, কড্ডা, কালিয়াকৈর ও টঙ্গীতে শিল্পপুলিশ, থানা পুলিশ এবং সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে বেলা ১১টার দিকে উভয় মহাসড়কে আবার স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সকালে প্রথমে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন গ্লোবোস গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা। অন্যদিকে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, গত শনিবার সকালে মৌচাকের গ্লোবোস কারখানায় আশরাফুল ইসলাম নামে এক শ্রমিকের গায়ে হাত তোলেন কারখানার লাইনম্যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন লাইনম্যান জহিরুল ইসলামসহ দু’জনকে পিটিয়ে আহত করে আশরাফুলের সহকর্মীরা। এক পর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা কর্মবিরতি করে কারখানা থেকে চলে যান। পরদিন কর্তৃপক্ষ কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার সকালে সেই বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ খবর মৌচাক, তেলিরচালা, সফিপুর এলাকার কারখানাগুলোয় ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে কমপক্ষে ১০-১২টি পোশাক তৈরির কারখানা ও সুতা তৈরির কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
অপরদিকে টঙ্গীতে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পোশাকশ্রমিকরা। কয়েকজন শ্রমিক জানান, বিএইচআইএস কারখানায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। গত সোমবার তাদের ফেব্রুয়ারি মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু বিকেলে মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত না জানিয়ে গোপনে কারখানা ত্যাগ করে। মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকরা প্রধান ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ লেখা নোটিশ দেখতে পান। এর পরই তারা মহাসড়ক অবরোধ করেন। বেলা ১১টার দিকে যৌথ বাহিনী শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে চার ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
গাজীপুর শিল্পপুলিশের সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের দাবি ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে। শ্রমিকদের গুজব থেকে দূরে থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদের নিয়মিত কাজে উপস্থিত থাকতে এবং কারখানার সম্পদ রক্ষার ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে।