ভিনদেশিদের খাদ্যাভ্যাস ভাগ্য বদলেছে কাদেরের

ঈশ্বরদীর বক্তাপুররে কাদেরের সবজি ক্ষেতে বাংলার সঙ্গে রুশ ভাষায় সাইনবোর্ড সমকাল
সেলিম সরদার, ঈশ্বরদী (পাবনা)
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ২৩:২৭
ঈশ্বরদী উপজেলায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। এ প্রকল্পে কর্মরত রয়েছেন রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশের অন্তত ৫ হাজার নাগরিক। তাদের খাদ্য তালিকায় থাকা ১৫ থেকে ২০ ধরনের সবজির অধিকাংশই স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায় না। তাদের খাদ্যাভ্যাসের কথা চিন্তা করে তরুণ কৃষক আব্দুল কাদের চিন্তা করলেন ভিন্ন কিছু করার। পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্তত ১৬ ধরনের সবজির আবাদ শুরু করেন তিনি।
বক্তারপুর গ্রামের ২০ বছরের তরুণ কৃষকের এক উদ্যোগেই বদলে গেছে ভাগ্য। বছরে অন্তত ২০ লাখ টাকা আয় করছেন এ গ্রামের কৃষক শাহদাত হোসেন প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল কাদের। ২০১৮ সালে রাশিয়ানসহ বিদেশিদের মধ্যে সবজি ও ‘চায়নিজ পাতার’ চাহিদা দেখে আগ্রহী হন। শুরুতে তিন কাঠা জমিতে আবাদ শুরু করেন। এখন সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আবাদ করছেন। মাসে তাঁর আয় বেড়ে হয়েছে অন্তত দেড় লাখ টাকা।
আব্দুল কাদের জানান, বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী তিনি লেটুসপাতা, সেলারি, পি-তুরস্কা, উগ্রো, বিটরুট, শ্যাওল, ক্যাবিস, ব্যাইজেলিক, স্ট্রবেরি, ক্যাপসিক্যামসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ করছেন। গ্রিনহাউস বা পলিনেট হাউস না থাকায় অনেক সময় লোকসান হয়। তাপ থাকায় অনেক সবজি আবাদ করতে পারছেন না।
সনাতন পদ্ধতিতে কাপড় ও পলিনেট ব্যবহার করে তাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চারা রোপণ করেন বলে জানান আব্দুল কাদের। তাপ নিয়ন্ত্রণ করতেই বেশি খরচ হয় বলে জানান তিনি। সরকারিভাবে পলিনেট হাউসের ব্যবস্থা করলে অনেক ধরনের বিদেশি সবজি চাষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এ তরুণ। তখন দেশের চায়নিজ রেস্টুরেন্টের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।
তরুণ এ কৃষকের কাছে রাজশাহীর আড়ানী থেকে পরামর্শ ও বীজ নিতে আসেন জহুরুল হক। তিনিও এসব সবজির চাষে সফল হতে পারবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকারের ভাষ্য, সহযোগিতা পেলে কাদেরের সফলতা দেশের কৃষিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
- বিষয় :
- খাদ্যপণ্য