ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

পুশইন

৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর, ৩ জন কারাগারে

৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর, ৩ জন কারাগারে

ছবি: সমকাল

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫ | ১৮:০৯

ভারতের গুজরাট রাজ্যের বিভিন্ন বস্তি থেকে তুলে এনে বাংলাদেশে পুশইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ বাংলাদেশি নাগরিককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপরদিকে ভারতীয় হিসেবে পরিচয় দেওয়া তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানা চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মিথুন সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারুল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও কোস্টগার্ড ৭৮ জনকে অবৈধভাবে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকার এক চরে ছেড়ে যায়। পরে বনবিভাগের সহায়তায় কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা দেয়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশের নাগরিক, আর বাকি তিনজন নিজেদের ভারতীয় বলে দাবি করেছেন, তাদের কাছে কোনো বৈধ ভারতীয় পরিচয়পত্র নেই।

সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়া এসব ‘বাংলাভাষী’দের ওপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরা হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, সর্বনিম্ন দুই মাস থেকে শুরু করে তিন যুগ তারা ভারতে বসবাস করেছেন। গত ২৬ এপ্রিল ভোরে কয়েকশ পুলিশ ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্য গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাটের বস্তি ঘেরাও করে তাদের তুলে নিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পাশের পুলিশ স্টেশনে নেওয়া হয়। ৫ মে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে পিছমোড়া করে দু’হাত বেঁধে বিমানে তোলা হয়। পরদিন জাহাজে তুলেই মারধর করা হয়। রাত ১২টার দিকে বঙ্গোপসাগরের চরে ফেলে দেওয়া হয়।

তারা জানান, প্রতিদিন সকালে একটি বিস্কুট ও অর্ধেক গ্লাস পানি দেওয়া হতো। বিকেলে এক পিস নষ্ট পাউরুটি দিত। শৌচাগারে যাওয়ার কথা বললেই পেটাত।

এক প্রশ্নের জবাবে লে. কমান্ডার আবরার হাসান জানান, তিন তরুণ নিজেদের ভারতে জম্ম হয়েছে দাবি করায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। যদিও তাদের বিষয়ে বিশদ তদন্তসহ পরিবারের অপরাপর সদস্যদের তথ্য যাচাইয়ের পর কারাগারে ওই তরুণদের বিষয়ে পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
 
এদিকে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আসা পুতুল আক্তার কবিতা নামের এক নারী দাবি করেন তার ছোট ভাই মো. অনীক হোসেনকে ৭৮ জনের সঙ্গে জাহাজে উঠানো হয়। কিন্তু তার ভাই ছাড়া সকলেই লোকালয়ে ফিরতে সক্ষম হলেও তার ভাইয়ের কোন হদিস মিলছে না। 

পুতুল জানায়, তার ভাই গত ২২ এপ্রিল গুজরাটে থাকা তার ভাবীকে আনতে সেখানে গিয়েছিল।

পুশইন হওয়া এসব ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনী খাতুন প্রত্যেককে পানি ও খাবার স্যালাইন উপহার দেন।

আরও পড়ুন

×