ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

স্ত্রীর পর আত্মহত্যা করলেন স্বামীও

স্ত্রীর পর আত্মহত্যা করলেন স্বামীও

প্রতীকী ছবি

আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫ | ১৯:৩২ | আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ | ১৯:৩৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী-স্ত্রী। রোববার রাতে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের কুড়েরপাড়ে এ ঘটনা ঘটে। 

স্বজনেরা জানিয়েছেন, শুরুতে জরিনা বেগম (২৩) কেরির ট্যাবলেট (চালের পোকা দমনের ওষুধ) সেবন করেন। তাঁকে বাঁচানো সম্ভব নয় বুঝতে পেরে স্বামী আল আমিনও একই ওষুধ সেবন করেন। 

আল আমিন (২৮) কুড়েরপাড়ের নান্নু মিয়ার ছেলে। তাঁর স্ত্রী জরিনা একই ইউনিয়নের নোয়াপাড়ার ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে। আল আমিন পেশায় ইজিবাইক চালক। 

জরিনার ভাই আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য, সংসারে অভাব-অনটনের কারণে অনেকদিন ধরে তাঁর বোন ও ভগ্নিপতি মানসিক চাপে ছিলেন। আল আমিন ঋণের টাকায় কেনা ইজিবাইক চালাতেন। কিছুদিন আগে সেটি বিক্রি করে দিলে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এর জের ধরে রোববার রাতে প্রথমে জরিনা বেগম কেরির ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বামী আল আমিনও একই ট্যাবলেট সেবন করেন। প্রতিবেশীদের সহায়তায় স্বজনেরা রাত ১০টার দিকে তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জরিনা। রাত ১টার দিকে ওই হাসপাতালেই মারা যান আল আমিনও।

লালপুর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাহজাহান মিয়া জানান, লোকমুখে শুনেছেন প্রথমে স্ত্রী ও পরে স্বামী কীটনাশক পান করেছিলেন। কী কারণে তারা কীটনাশক পান করেছিলেন, এর সঠিক কারণ জানেন না।

পুলিশ লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে রাখে। সোমবার বিকেলে সেখানে পাওয়া যায় প্রতিবেশী দেলোয়ার আহমেদ আকাশকে। তাঁর ভাষ্য, এ দম্পতির মধ্যে আগে কখনও মনোমালিন্যের কথা শোনেননি। আল আমিনের বাবা অন্য এলাকা থেকে জমি কিনে এখানে বসবাস শুরু করেন। তিনি শুনেছেন, আল আমিন টুকটাক মাদক সেবন করতেন, সঙ্গও তেমন ভালো ছিল না। তাঁর মা সামসুন্নাহারও আলাদা থাকেন। তিনি (মা) দেড় শতক জমি বিক্রির টাকায় ছেলেকে অটোরিকশা কিনে দিয়েছিলেন। 

দেলোয়ার আহমেদের ভাষ্য, ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধের জন্য অটোরিকশাটি আল আমিন বিক্রি করে দেন। এ নিয়ে মা ও স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য দেখা দেয়। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে স্ত্রী জরিনা কীটনাশক সেবন করেন। বিষয়টি টের পেয়ে আল আমিন তাঁর কাছ থেকে ট্যাবলেট কেড়ে নেন। 

প্রতিবেশীরা শুরুতে জরিনাকে হাসপাতালে নিয়ে যান জানিয়ে দেলোয়ার বলেন, স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি আঁচ করেই হয়তো আল আমিন ভয়ে স্ত্রীর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া কীটনাশক সেবন করেন। পরে রাতেই হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আল আমিনের ঋণের বিষয়টি মা-স্ত্রী টের পেলেও পরিমাণ কতো কেউই জানতেন না। 

আশুগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন সোমবার বিকেলে বলেন, মরদেহ দুটি সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলছে। 

আরও পড়ুন

×