ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

মির্জাপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে প্রবাসীর মাইক্রোবাসে ডাকাতি, গুলি 

মির্জাপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে প্রবাসীর মাইক্রোবাসে ডাকাতি, গুলি 

ডাকাতির ঘটনায় আহত একজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫ | ১১:৪৯ | আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ | ১৪:২৩

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে এক প্রবাসীর মাইক্রোবাসে প্রশাসনের লোক পরিচয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দলের সদস্যরা প্রবাসী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মালামাল ছিনিয়ে নিয়েছে। 

শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পোষ্টকামুরী চরপাড়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশনের কাছে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গোড়াই হাইওয়ে থানার রেকার চালকের সহকারী তুহিন ডাকাতের গুলিতে আহত হয়েছেন। তাকে গুরুতর অবস্থায় টাঙ্গাইলের কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম ডাকাতির তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ ডাকাত দলের ব্যবহৃত একটি হাইয়েজ গাড়ি জব্দ করেছে। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে মাইক্রোবাসের যাত্রী প্রবাসীর স্বজন সুমাইয়া আক্তার জানান, তার ননদ বিউটি আক্তার জর্ডান প্রবাসী। তিনি বৃহস্পতিবার জর্ডান থেকে ঢাকায় আসেন। তারা টঙ্গী এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে একদিন অবস্থানের পর শুক্রবার রাত ১২টার দিকে মাইক্রোবাসে বগুড়ার সারিয়াকান্দির উদ্দেশে রওনা দেন। মাইক্রোবাসে তার ননদ বিউটি, সম্পা, শ্বশুর আব্দুল হামিদ ও তাদের শিশু সন্তান ছিল। রাত আড়াইটার দিকে তাদের মাইক্রোবাসটি মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পোষ্টকামুরী চরপাড়া এলাকার পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশনের কাছে পৌঁছায়। তখন পেছন দিক থেকে আসা ডাকাত দলের একটি হাইস গাড়ি তাদের মাইক্রোবাসটির গতিরোধ করে। হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি, পিস্তল ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র হাতে ৭ থেকে ৮ জন ডাকাত প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে প্রবাসীর একাধিক ব্যাগ তল্লাশি করে নগদ ৭০ হাজার টাকা, কয়েকটি মোবাইল ফোন নেয়।  

এ সময় ঘটনাস্থলের কাছেই চরপাড়া মোড়ে ছিল টহল পুলিশ ও গোড়াই হাইওয়ে থানার রেকার। মহাসড়কের রাটিয়াপাড়া সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রেকারটি সেখানে যাচ্ছিলো। দুটি মাইক্রাবাস এবং মানুষের জটলা দেখে রেকার চালক আমিনুল ইসলাম সহকারী তুহিন সেখানে গিয়ে কি হয়েছে জানতে চাইলে প্রবাসীর স্বজন এবং ডাকাত দলের সদস্যরা এড়িয়ে যায়। তাদের সন্দেহ হলে রেকার দিয়ে হাইস এবং মাইক্রোবাসকে বেরিকেড দেয়। পরে রেকার চালকের সহকারী তুহিন গাড়ির চাবি নিতে গেলে তার হাতে গুলি করে ডাকাতরা। গুলিবিদ্ধ হয়েও তুহিন ডাকাত দলের এক সদস্যকে ধরতে যান। এ সময় ডাকাতরা রেকারের মধ্যে গুলি করে। টাহল পুলিশ এগিয়ে গেলে তারা গাড়ি রেখে পালিয়ে যায়। 

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রবাসীর মাইক্রোবাস, ডাকাত দলের ফেলে হাইস গাড়ি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ তুহিনকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তুহিন বলেন, ডাকাত দলে কমপক্ষে ৭-৮ জন ছিল। তাদের ঠেকাতে গেরে আমার হাতে গুলি করে। এরপর ডাকাতরা রেকারে গুলি করে। টহল পুলিশ এগিয়ে এলে ডাকাতদল তাদের গাড়ি রেখে পালিয়ে যায়।

কুমুদিনী হাসপাতালের উপপরিচালক অনিমেষ ভৌমিক বলেন, গুলিবিদ্ধ তুহিনের চিকিৎসা চলছে। এখন তিনি শঙ্কামুক্ত আছে।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। ডাকাত দলের ফেলে যাওয়া একটি হাইস গাড়ি ও প্রবাসীর মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ তুহিনকে কুমুদিনী ভর্তি করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুন

×