ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় কুয়েট শিক্ষক সমিতি

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হতাশা, বাড়ছে সেশনজট

ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় কুয়েট শিক্ষক সমিতি

ফাইল ছবি

 খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫ | ০০:৫১

ক্লাসে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক সমিতি। সোমবার সমিতির সভা শেষে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ এবং শিক্ষক লাঞ্ছনায় জড়িতদের শাস্তি না হলে ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করা হয়। শিক্ষক নেতাদের এ ঘোষণায় হতাশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

চার মাস ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন কুয়েটের সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী। বিশেষ করে শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়ছেন। বেড়ে গেছে সেশনজট। গত ২৪ এপ্রিল থেকে নতুন ব্যাচের ক্লাস শুরু হয়নি।

ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। ওই রাতে হামলাকারীদের পক্ষ অবলম্বনের অভিযোগ তুলে কিছু শিক্ষার্থী তৎকালীন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছনা করেন।

পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ১ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য পদে নিয়োগ দিয়েছিল।
গত ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ক্লাসে যাননি শিক্ষকরা। এ ছাড়া ১৮ মে থেকে প্রশাসনিক কর্ম বর্জন করে আসছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় তারা। শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের মুখে গত ২২ মে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মো. হযরত আলী পদত্যাগ করে চুয়েটে চলে যান। এর পর থেকে উপাচার্য এবং ২৫ এপ্রিল থেকে উপ-উপাচার্যের পদ শূন্য রয়েছে।

শিক্ষার্থী মহিউজ্জামান মোল্লা উপল, মোহন আলী ও শেখ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর পক্ষে তারা বারবার শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। চার মাসের অচলাবস্থার কারণে সব শিক্ষার্থীই সেশনজটে পড়েছেন। তারা বুয়েট ও রুয়েট থেকে এগিয়ে ছিলেন, এখন পিছিয়ে পড়েছেন।
অভিভাবকদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করে পোস্ট দিচ্ছেন। শিক্ষকদের কেউ কেউ সমিতির এই সিদ্ধান্ত অবিবেচনাপ্রসূত বলে মন্তব্য করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকেও শিক্ষক নেতাদের ক্লাসে ফেরার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ অবস্থায় গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে বৈঠকে বসে শিক্ষক সমিতি। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম। সভা শেষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. ফারুক হোসেন বলেন, দ্রুত নতুন উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে। নতুন উপাচার্য যোগ দিলে আমরা তাঁর কাছে দাবি তুলে ধরব। লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হবে না।

আরও পড়ুন

×