ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

কুবিতে ম্যানার শিখানোর নামে শিক্ষার্থীকে থাপ্পড়

কুবিতে ম্যানার শিখানোর নামে শিক্ষার্থীকে থাপ্পড়

ফাইল ছবি

কুবি সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫ | ১৯:৫৭

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মার্কেটিং বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের নবাগত শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের দরজা বন্ধ করে র‌্যাগ দেওয়া ও গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী এই কাণ্ড ঘটান বলে অভিযোগ করেছেন মার্কেটিং বিভাগের ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, নবাগত শিক্ষার্থীরা প্রথমদিন শ্রেণিকক্ষে এলে দরজা বন্ধ করে র‌্যাগ দেন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। র‌্যাগিংয়ের সময় অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ বেঞ্চের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখে ১৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। এ সময় জুনিয়র এক শিক্ষার্থী ঠিকমতো পরিচয় দিতে না পারলে তাকে থাপ্পড় দিয়ে ‘আমরা তোদের … লাগি’ বলে মন্তব্য করেন শিক্ষার্থী শয়ন দাস। আরেক শিক্ষার্থীর শার্টের হাতা ভাজ করা কেন জিজ্ঞেস করেই তার শার্টের হাতা ধরে হ্যাচকা টান দিলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর হাতের ডায়ালাইসিসের ক্যানেলা ছুটে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ডায়ালাইসিসের রোগী। তার কিডনি পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া ‘কার কাছে বিচার দিবি? ম্যানার শেখানোর জন্য টিচাররাই আমাদেরকে পাঠিয়েছে’ এই বলে পুরো ব্যাচকে শাসান অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা।

র‌্যাগিংয়ের ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি। পরে কথা হয় মার্কেটিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মেহের নিগারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা র্যা গিংয়ের সত্যতা পেয়েছি। যে ছেলেটি একাজ করেছে আমরা তাকে আইডেন্টিফাই (চিহ্নিত) করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগ খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেবে।’ 

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বলেছেন ম্যানার শেখানোর জন্য শিক্ষকরাই তাদের পাঠিয়েছেন, এ বিষয়ে কী বলবেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার বিভাগের সকল শিক্ষক ভালো। আশা করি, উনারা এরকম কিছু করবেন না। তবে আমরা এটি ফাইন্ড আউট (খুঁজে বের) করার চেষ্টা করবো। যদি কেউ জড়িত থাকেন তাহলে সেটিও আমরা ডিসক্লোজ (প্রকাশ) করবো।’

প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিমের ভাষ্য, এ ব্যাপারে মার্কেটিং বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছেন তারা। বিভাগের সূত্রে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিচার হওয়ার আগ পর্যন্ত মার্কেটিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার আবেদন করা হয়েছে। র্যা গিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ও বহিষ্কারের নীতিতে অবিচল থাকবেন তারা।

এদিকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত চলাকালীন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।

আরও পড়ুন

×