দেলোয়ার বাহিনীর ভয়ে সন্ত্রস্ত ছিল এলাকার লোকজন: র্যাব
-samakal-5f7b2e2e63933.jpg)
গ্রেপ্তার দেলোয়ার (বায়ে) ও বাদল -সমকাল
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২০ | ০৮:৩১
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং সেই ঘটনার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেনকে গুলিভর্তি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার গভীর রাতে নোয়াখালি থেকে ঢাকাগামী একটি বাস তল্লাশি করে দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডে র্যাব-১১’র একটি তল্লাশি চৌকিতে দেলোয়ারকে বহনকারী বাসটি তল্লাশির সময় তিনি বাস থেকে নেমে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে তাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। রাতেই তাকে জিজ্ঞাবাদ করে তার দেওয়া তথ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগী নূর হোসেন বাদলকে রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচর ফাঁড়ি গলি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আদমজীতে অবস্থিত র্যাব-১১ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারদের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নির্যাতিত ওই নারীর ১৮ বছর আগে বিয়ে হয়। তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় কয়েক বছর আগে তিনি বাপের বাড়ি চলে আসেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেকে নিয়ে ওই নারী তার এক ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। সম্প্রতি স্বামী তার কাছে আসা-যাওয়া করতে শুরু করেন। এদিকে স্বামী না থাকায় বেশ কিছুদিন থেকেই ওই নারীকে দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু তার কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে ক্ষুব্ধ ছিল দেলোয়ার বাহিনী। হঠাৎ ওই নারীর স্বামী আসা যাওয়া শুরু করায় দেলোয়ার ও তার সহযোগীদের নজর পড়ে তাদের উপর। জমে থাকা ক্ষোভ থেকে ওই নারীকে শায়েস্তা করতে গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর বাবার বাড়িতে হানা দেন দেলোয়ার, বাদলসহ তাদের সহযোগীরা। এক পর্যায়ে স্বামীকে আটকে রেখে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। ওই ঘটনার ভিডিও করেন দেলোয়ার বাহিনীর সদস্য জামাল। নির্যাতনের ভিডিও ধারণের পর দেলোয়ার ও তার সহযোগিরা ওই নারীর কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। সবশেষ গত রোববার ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে পুরো দেশে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, ‘দেলোয়ার বাহিনী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত। দেলোয়ার এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন ভীত সন্ত্রস্ত ছিল। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দু’টি হত্যা মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ঘরে ঢুকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। ঘটনার প্রায় এক মাস পর রোববার ফেসবুকে ওই ভিডিও ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ভিডিও ভাইরাল হলে দেশজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে রোববার রাতে ওই নির্যাতিতা গৃহবধূ বাদি হয়ে ৯ জনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন।