ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ছয় বছর পর ‌'মৃত' যুবকের প্রত্যাবর্তন

ছয় বছর পর ‌'মৃত' যুবকের প্রত্যাবর্তন

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২০ | ১০:২৫

মামুন নামের যুবকটিকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে-এমনটাই জেনেছিল মানুষ। এ ঘটনায় করা মামলায় আসামি হতে হয়েছিল এক নারীসহ ছয়জনকে। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছর পর মামুন নামের সেই যুবক ফিরে আসায় ঘটনাপ্রবাহই পাল্টে গেছে। বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস শুনানি শেষে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন নিরপরাধ ছয়জনকে।

এদিকে ওই মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ও এসআই জিয়াউদ্দিন উজ্জ্বল সশরীরে বৃহস্পতিবার একই আদালতে হাজির হয়ে তাদের তদন্তে ভুল থাকার কথা স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

এ সময় তিন কর্মকর্তা আদালতকে বলেন, এই মামলায় মাকসুদা বেগম নামে এক সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ভিকটিম মামুনকে অপহরণের পর বিষ মিশ্রিত শরবত খাইয়ে হত্যার পর লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। এ কারণেই তদন্তে এই ভুল হয়েছে।

মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া ছয়জন হলেন- তাসলিমা, তার বাবা রহমত উল্লাহ, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সোহেল ও সাগর এবং মামা সাত্তার মোল্লা।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমদাদ হোসেন সোহেল বলেন, ২০১৪ সালের ১০ মে মামুনকে অপহরণ করা হয়েছে- এমন অভিযোগ এনে দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন মামুনের বাবা আবুল কালাম। মামলায় ছয়জনকে বিবাদী করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামুনকে অপহরণের পর গুমের অভিযোগ করা হয়েছিল।

মামলাটি প্রথম তদন্ত করেন ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান। পরে এটি পুলিশের অপরাধ বিভাগ সিআইডিতে ন্যস্ত করা হয়। সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। এতে মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জনকেই অভিযুক্ত করা হয়। সাক্ষী করা হয় ২১ জনকে।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১০ মে তাসলিমাকে দিয়ে কৌশলে মামুনকে বাড়ি থেকে ডেকে নেওয়া হয়। পরে তাসলিমার বিয়ের প্রস্তাবে মামুন রাজি না হওয়ায় বিবাদী ছয়জন মিলে কোমলপানীয়র সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে মামুনকে অচেতন করে। এরপর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তাকে কোথায় কীভাবে কী অবস্থায় রাখা হয়েছে, তা জানা যায়নি।

এরই মধ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে এসে উপস্থিত হন কথিত অপহরণের শিকার মামুন। মামুন ফিরে এসে আদালতকে জানান, তাকে কেউ অপহরণ করেনি। ২০১৪ সালের ১০ মে তিনি বাবা-মায়ের সঙ্গে রাগ করে বাড়ি ছাড়েন। এরপর নাটোরে গিয়ে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় কাজ করেছেন। বাড়ির কারও সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগও ছিল না। অপহরণের মামলা সম্পর্কেও কিছুই জানতেন না তিনি।

আরও পড়ুন

×