প্রত্যেকের পরিবারকে সময় দেওয়া উচিত

ফরিদপুরে ‘বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কিশোর অপরাধ পরিস্থিতি, কারণ ও প্রতিকার’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে দিনব্যাপী এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামানের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান, এনজিও কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা অংশ নেন।

সেমিনারে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশের উদ্যোগে সম্প্রতি বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে কিশোর অপরাধ কমবে বলে আশা করা যায়। আমাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। পাশাপাশি আমাদের লোভের মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। এছাড়া সন্ধ্যার পর সড়কে শুধু কিশোর তরুণ নয় অভিভাবকদেরও ঘরের বাইরে থাকা উচিত নয়, তাদের উচিত বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে সময় দেওয়া। পাশাপাশি কিশোর অপরাধের কারণ বের করতে গবেষণাধর্মী কাজ শুরু করা জরুরি।

চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজান খান বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের দোষে বাড়ছে কিশোর অপরাধ। আমরা এসব কিশোরকে রাজনীতির প্রযোজনে ব্যবহার করি। আমাদের রাজনীতি নিজেদের স্বার্থে, সমাজকে কলুষমুক্ত করার কথা আমরা ভাবি না।

নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ঠান্ডু বলেন, আমরা অভিভাবকরা টাকার নেশায় বুদ হয়ে আছি। আমরা টাকার পেছনে ঘুরছি। ছেলে-মেয়ে মানুষ হলো কী হলো না সেদিকে আমাদের কোনো খেয়াল নেই।

মধুখালীর জাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, অভিভাবক, রাজনীতিবিদ ও পুলিশের দুর্বলতার কারণে সমাজে বাড়ছে কিশোর অপরাধ।

সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক নূরুল ইসলাম বলেন, বাবা ও মা দুজনেই কর্মজীবী। সন্তান বড় হচ্ছে আয়ার কাছে।

কিশোর অপরাধ একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আগে বাচ্চারা স্কুল থেকে পালিয়ে যেত, এখন বাচ্চাদের কাছ থেকে স্কুল পালিয়ে যাচ্ছে।

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান বলেন, কিশোর গ্যাংগুলো প্রশ্রয় দেন রাজনীতিবিদরা। নেতাদের পোস্টার সাটানো ও নানা ফাইফরমাস খেটে খেটে তৈরি হচ্ছে কিশোর গ্যাং।

জেলা পুলিশ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান।

অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মোশারফ আলী, ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ চৌধুরী, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, ব্লাস্টের সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী, রাসিনের আসমা আক্তার প্রমুখ।