আদালত অবমাননা: পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব

আদালত অবমাননার জন্য পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ নেওয়াজকে তলব করেছেন পাবনার ঈশ্বরদী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক এস, এম, শরিয়ত উল্লাহ।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদী সিনিয়র সহকারী জজ আদালত থেকে গত ২৪ নভেম্বর একটি মামলায় দখল প্রদানের কাজে সহযোগিতার জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য খরচ বাবদ কত টাকা এবং কোন হিসাবে জমা দিতে হবে তা জানাতে আদালত থেকে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট  মো. জাহিদ নেওয়াজ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আদালতে পাঠানো হয়। যেখানে আদালত থেকে যে বিষয় জানতে চাওয়া হয় তার উত্তর না দিয়ে উল্টো আদালতের চিঠির ভাষাগত ভুল উল্লেখ করে ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য আদালতকে বলা হয়। এমনকি আদালতের চিঠিকে ‘সাধারণ দাপ্তরিক ভদ্রতা ও শিষ্টাচার বিবর্জিত এবং ভদ্রজনোচিত নয়’ বলে উল্লেখ করা হয়।

সূত্র আরো জানায়, একই চিঠির উত্তরে ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসন সব সময় উত্তর দিয়েছেন এবং চিঠির ভাষা নিয়ে কখনোই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেননি। আদালত তার আদেশে আরো বলেছেন, যদি চিঠিতে কোন ভাষাগত ত্রুটি থেকেও থাকে সেক্ষেত্রে সুন্দর ভাষায় সেটা আদালতকে অবগত করা যেত।  আদালত নিশ্চই ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের এমন আচরণে আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আদালতের বিরুদ্ধে একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মচারীর এমন ভাষা ব্যবহারকে আদালত অবমাননা হিসেবে গণ্য করেন। তাছাড়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জিজ্ঞাসিত বিষয়ের উত্তর না দেয়ায় মোকদ্দমা নিষ্পত্তি বিলম্ব ও পক্ষদের ভোগান্তি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। জেলা প্রশাসন থেকে প্রেরিত চিঠির বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আদালত পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যখ্যা প্রদানে নির্দেশ প্রদান করেন। একইসঙ্গে জেলা প্রশাসনের চিঠিকে আদালত অবমাননা গণ্য করে এ বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নজরে আনার অনুরোধ করে আদেশের অনুলিপি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর প্রেরণ করা হয়।

পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ নেওয়াজ চিঠি পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে সমকালকে বলেন, আমার নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই। আমি জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছি। আদালত না বুঝে আমাকে ডেকেছেন।