সড়কে আহত শিক্ষককে হাতকড়া পরিয়ে চিকিৎসা

আহত স্কুলশিক্ষক শাকিলকে হাতকড়া পরিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে - সমকাল
নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২১ | ১১:০৪
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক স্কুলশিক্ষককে হাতকড়া পরিয়ে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি সড়ক নিরাপত্তা আইনে পুলিশের করা মামলার আসামি। তবে পুলিশের অমানবিক আচরণে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
চিকিৎসাধীন শাকিল মিয়া (৩০) কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার শাকতলি উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের সহকারী শিক্ষক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ক্যান্সার আক্রান্ত বাবাকে দেখার জন্য শিক্ষক শাকিল বৃহস্পতিবার মোটরসাইকেলে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত আনুমানিক ১০টায় তিনি উপজেলার সূর্যকান্দির ফায়ার সার্ভিস অফিস এলাকা অতিক্রমকালে টহলরত পুলিশের সদস্য কবীর হোসেনকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দেন। এ সময় উভয়ই রাস্তায় ছিটকে পড়ে আহত হন। অন্য পুলিশ সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ সদস্য কবীর হোসেনকে ২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্কুলশিক্ষকও মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান।
সরাইল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, তিনি সড়ক নিরাপত্তা আইনে মামলার আসামি। অসুস্থতার জন্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হলেই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। যেন না পালাতে পারেন, সেজন্য এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শিক্ষক শাকিলের স্ত্রী খাদিজা আক্তার কান্না করতে করতে বলেন, স্বামী গুরুতর অসুস্থ। তিনি তো দাগি আসামিও নন এবং গুরুতর কোনো অপরাধও করেননি। পুলিশ পাহারায় এভাবে তাকে চিকিৎসা দেওয়া দেখে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিসুর রহমান জানান, পুলিশের জিম্মায় তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মোটরসাইকেল চালানোর সময় তার মাথায় হেলমেট ও চোখে চশমা ছিল না।
তিনি আরও জানান, চোখে পোকা পড়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল পুলিশ সদস্যের ওপর উঠিয়ে দেন। চিকিৎসার পর তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা বারের জ্যেষ্ঠ সদস্য আবু তাহের বলেন, যেহেতু তিনি স্কুল শিক্ষক, তার শত শত ছাত্রছাত্রী আছে। এভাবে হাতকড়া পরিয়ে তাকে পুলিশ হেয় না করলেও পারত। আর দুর্ঘটনা তো দুঘটনাই। তিনি তো দাগি কোনো আসামি নন।