সেই বৃদ্ধা মাকে চিকিৎসা সহায়তা দিলেন বরিশালের জেলা প্রশাসক

সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর বৈদ্যপাড়ায় বৃদ্ধা জাহানূর বেগমের ভাড়া বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন জেলা প্রশাসক -সমকাল
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২১ | ০৫:২৬ | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২১ | ০৫:২৬
ভরণপোষণ না দেওয়ায় সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করা সেই অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিলেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার। সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর বৈদ্যপাড়ায় বৃদ্ধা জাহানূর বেগমের ভাড়া বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন জেলা প্রশাসক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার, সমাজ সেবা প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
জাহানূর বেগমের বাড়ি বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায়। স্বামী সিরাজুল ইসলাম ছিলেন বেসরকারি স্কুল শিক্ষক। ২০১৪ সালে তিনি মারা যান। চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে মেজ ছেলে খুলনায় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং বড় মেয়ে ও জামাই দুজনেই চাকরি করেন। কিন্তু তারা মায়ের কোনো খোঁজ-খবর নেন না।
স্বামীর মৃত্যুর পর কলেজ শিক্ষক বড় ছেলের কাছেই দীর্ঘদিন থাকছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত জাহানূর বেগম। বড় ছেলে তার ভরণ-পোষণ ও অসুস্থতার চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। এখন তার পিঠে পচন ধরায় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। এতে কয়েক লাখ টাকার দরকার। এজন্য জাহানূরের নামে থাকা কিছু জমি বিক্রি করে চিকিৎসা করানোর উদ্যোগ নিলেও মেজ ছেলে ও বড় মেয়ে এতে বাধা দেন। বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বড় ছেলেকে দিয়ে জাহানূর বেগম ভরণ-পোষণ আইনে মামলার আবেদন পাঠান বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। পরে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ মামলার আর্জিটি গ্রহণ করে এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ওইদিন নগরের বিএম কলেজ সংলগ্ন বৈদ্যপাড়া এলাকায় জাহানূর বেগমের ভাড়া বাড়িতে যান। সেখানে বিচারক ৱশয্যাশায়ী জাহানূর বেগমের জবানবন্দি নেন।
এরপর বিচারক মাসুম বিল্লাহ ওইদিন বিকেলে মামলাটি গ্রহণ করে ওই বৃদ্ধার মেজ ছেলে ও ছোট মেয়ের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। আগামী ১ ডিসেম্বর তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।