ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদের গাড়িবহরে হামলা, আহত ৯

উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদের গাড়িবহরে হামলা, আহত ৯

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২২ | ০২:২৯ | আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২২ | ০৩:২২

আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ১নং রহিমপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জুনেল আহমদ তরফদার ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ করেছেন নৌকার প্রার্থী ইফতেখার আহমেদ বদরুল ও তার সমর্থকরা।

রোববার রাত ১০টায় উপজেলার মুন্সীবাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার পরেও এমপি অক্ষত ছিলেন। তবে ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এমপির গানম্যান, ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী (এপিএস), গাড়িচালকসহ ৯ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। গুরুতর আহত দুজনকে সিলেটে রেফার্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় নৌকার প্রার্থী ইফতেখার আহমেদ বদরুলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও বড় ভাই ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল বাদী হয়ে ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করে সোমবার সকালে কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। আটকরা হলেন- রহিমপুর ইউনিয়নের ছয়কুট গ্রামের রাসেল মিয়া (৩২) ও প্রতাপী গ্রামের ওয়াহিদ মিয়া (৩৭)।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নে পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় এমপি আব্দুস শহীদের ছোট ভাই ইফতেখার আহমদ বদরুল নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আরেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হলেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ও সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেল আহমেদ তরফদার। রোববার রাতে এমপি উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ব্যক্তিগত একটি অনুষ্ঠান শেষ করে মৌলভীবাজার ফেরার পথে মুন্সিবাজারস্থ নৌকার প্রধান নিবার্চনী কাযার্লয়ের সামনে আসেন। এ সময় এলাকাবাসীর অনুরোধে সেখানে চা খাওয়ার সময় বিদ্রোহী প্রার্থী জুনেল আহমদ তরফদার ও তার সমর্থকরা আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ তুলে অতর্কিতভাবে দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়।

খবর পেয়ে এমপির ছোট ভাই ইফতেখার আহমেদ বদরুলসহ তার সমর্থকরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী ইমাম হোসেন সোহেল, গানম্যান তরিকুল ইসলাম, গাড়িচালক স্বপনসহ অন্তত ৯ জন আহত হন।

পরে কমলগঞ্জ থানা থেকে পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।  আহতদের মধ্যে গুরুতর ৫ জন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

রাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ আহতদের দেখতে কমলগঞ্জ হাসপাতালে যান এবং রাত ১২টায় শ্রীমঙ্গলস্থ নিজ বাসায় চলে যান।

মামলার বাদী ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল বলেন, বড় ভাই সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ একেবারে ব্যক্তিগত সফরে রোববার সন্ধ্যা রাতে শমশেরনগরে তার এক ছাত্রের বাসায় এসেছিলেন। সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি সিদ্ধেশ্বরপুর হয়ে শ্রীমঙ্গল ফেরার পথে ছোট ভাই ইমতিয়াজ আহমেদের সাথে দেখা করতে আসেন। তাকে না পেয়ে তিনি তার অফিসে বসেন। এসময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে থাকা আওয়ামী বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী জুনেল আহমেদ তরফদারের উপস্থিতিতে তার নির্দেশনায় এ হামলা চালানো হয়।

রহিমপুর ইউনিয়নের আওয়ামী বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী জুনেল আহমেদ তরফদার বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্গন করে ছয় বারের নির্বাচিত আওয়ামীলীগের দলীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিলেন। বিক্ষুদ্ধ লোকজন ক্ষোভে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি কোন হামলার নির্দেশ দেননি এবং হামলাও করেননি বলে দাবি করেন।

কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ দুইজন আসামিকে আটক করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

উল্লেখ্য, পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি কমলগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৩, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০৬ ও সাধারণ সদস্য পদে ৩২৭ জনসহ মোট ৪৬৬ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।



আরও পড়ুন

×