প্রবীণদের জন্য উপহার 'ভালোবাসার দিন'

মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ০৯:৫৯ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ০৯:৫৯
চলার শক্তি নেই, ভর দিতে হয় লাঠিতে। অনেকেই ঠিকমতো চোখে দেখেন না। আবার কেউ বা শোনেন না কানে। বয়সের ভারে সবাই নূ্যব্জ। নিঃসঙ্গতা তাদের নিত্যসঙ্গী। সেসব প্রবীণের জন্য ভালোবাসার একটি দিন উপহার দিল মেহেরপুর সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের একদল যুবক। অষ্টমবারের মতো এই আয়োজনে শুক্রবার হাজির হয়েছিলেন সাতটি ইউনিয়নের ৪২টি গ্রামের হাজারো প্রবীণ। তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয় সকাল ও দুপুরে সম্পূর্ণ বাঙালিয়ানা খাওয়া-দাওয়ার। সকালে দই, চিড়া, মিষ্টি, বুদিয়া। আর দুপুরে ভাত, মাংস, ডাল, ভাজি ও সবজি। 'মুরব্বিদের মিলনমেলা' নামে ওই অনুষ্ঠানে খোশগল্প, কোলাকুলি ও পারস্পরিক আলাপচারিতায় মহাখুশি এলাকার প্রবীণরা।
গাড়াবাড়িয়া গ্রামের মুরব্বি আমিরুল ইসলাম বলেন, এখানে আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে। খাওয়া-দাওয়া খুব ভালো হয়েছে। অনেকের সঙ্গে আলাপচারিতা, মতবিনিময়সহ কোলাকুলি করে আনন্দ পেলাম।
শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এ আয়োজনে অংশ নিতে পারা এক অন্যরকম অনুভূতি। একসঙ্গে সমবয়সী এত মানুষের দেখা পাওয়া খুবই ভাগ্যের বিষয়।
মিলনমেলার প্রধান উদ্যোক্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের নিজেদের বৃদ্ধ মা-বাবার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে তাদের সমবয়সীদেরও একত্রিত করে থাকি। এতে গ্রামের মুরব্বিরাও তাদের সমবয়সী অন্য গ্রামের মুরব্বিদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে ওঠেন। আমরা নিজেরাই গ্রামের উদ্যোগীদের নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করি। এ জন্য বাইরের কারও কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয় না। বৃদ্ধদের এক জায়গায় করে তাদের ভালোবাসার একটি দিন উপহার দিতে পারায় তারা যেমন খুশি হন, আমরাও খুশি হই।
'মুরব্বিদের মিলনমেলা' অনুষ্ঠানের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবু তাহের বলেন, অহরহ খবরে ছাপা হয়, শোনা যায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে রাস্তায় ফেলে দেয়, বয়স্ক নিবাসে রেখে আসে, লাশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। ভালোবাসা প্রকাশের ধরন বিচিত্র। একেকজনের কাছে একেক রকম। তবে আমাদের গ্রামের যুবকদের ভালোবাসার গল্প একটু ভিন্নমাত্রার, অকৃত্রিম। আমরা এই এক দিনের জন্য ফিরে যাই আমাদের শৈশব, কৈশোর, যৌবন পেরিয়ে প্রৌঢ়ত্বের নানা বাস্তবতার দিনগুলোতে।
- বিষয় :
- নিঃসঙ্গতা
- নিত্যসঙ্গী
- প্রবীণ
- ভালোবাসার দিন