ফারমার্স ব্যাংকের ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ
বাবুল চিশতীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২২ | ০৮:১৮ | আপডেট: ০১ মে ২০২৩ | ১০:১৯
জালিয়াতি করে সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীসহ (বাবুল চিশতী) ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক বাদী হয়ে কমিশনের এই কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ব্যাংকের বর্তমান এমডিকেও (চলতি দায়িত্ব) আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, ঋণ গ্রহীতার বন্ধকীকৃত সম্পত্তির ফোর্সড সেল ভেল্যু কম জানা সত্ত্বেও তাকে পূর্বে প্রদত্ত ১৪ কোটি টাকা ঋণের অতিরিক্ত ১০ কোটি টাকা ৩ মাস মেয়াদি সময়ে ঋণ প্রদান করেছেন। যা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ছগীর চৌধুরী ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালক আবু আলম ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তারের সহায়তায় তাদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর, রূপান্তরের মাধ্যমে ও নগদে উত্তোলণ করে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণামূলকভাবে ওই ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের চট্টগ্রামস্থ খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ওই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, চট্টগ্রামের এসবি অটো ব্রিকসের এমডি মো. ছগীর চৌধুরীর দুটি ঋণের বিপরীতে জেলার পটিয়া থানার খাশিয়াইস মৌজায় অবস্থিত ১৯৯.৪০ শতক জমি রেজিস্টার্ড মর্টগেজ দলিল নং-৪০৫৬ মূলে বন্ধকীকরণ করা হয়। ব্যাংকের ওই শাখা কর্তৃক নিযুক্ত তৃতীয় পক্ষ ন্যাশনাল সার্ভে বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃক প্রণীত মূল্যায়ন প্রতিবেদন মোতাবেক মর্টগেজকৃত সম্পত্তির ফোর্সড সেল ভেল্যু ২৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা হলেও ঋণ গ্রহীতাকে সর্বমোট ২৪ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করা হয়।
২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ওই ১৯৯.৪ শতাংশ জমির মার্কেট ভ্যালু নির্ধারিত হয় ১ কোটি ৯৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এবং ফোর্সড সেল ভেল্যু নির্ধারিত হয় এক কোটি ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা ঋণ গ্রহীতার বন্ধকীকৃত সম্পত্তির ফোর্সড সেল ভেল্যু কম জানা সত্ত্বেও তাকে পূর্বে প্রদত্ত ১৪ কোটি টাকা ঋণের অতিরিক্ত ১০ কোটি টাকা টাইম ঋণ প্রদান করেছেন। ওই মঞ্জুরিকৃত টাইম ঋণের ১০ কোটি টাকা এসবি অটো ব্রিকসের টাইম ঋণ হিসাবে ২০১৫ সালের ২২ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত পাঁচ কোটি করে ২ বারে মোট ১০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। এই পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/ ৪২০/ ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতে প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক দি ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এসভিপি শওকত ওসমান চৌধুরী, খাতুনগঞ্জ শাখার সাবেক এস ই ও এন্ড ম্যানেজার অপারেশন মো. আনোয়ার হোসেন, এসবি অটো ব্রিকস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি মো. ছগীর চৌধুরী, মেসার্স আলম এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. আবু আলম, মো. আবু আলমের স্ত্রী পারভীন আক্তার, ন্যাশনাল সার্ভে বাংলাদেশ লিমিটেডের এমডি মো. মাজেদুল ইসলাম, ব্যাংকের বর্তমান এমডি (চলতি দায়িত্ব) (সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট) ফয়সাল আহসান চৌধুরী, সাবেক ডিএমডি একেএম শামীম, সাবেক এমডি ও সিইও চৌধুরী মোস্তাক আহমেদ ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. আতহার উদ্দিন।