ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্টজন

জেন্ডার বৈষম্য বিলোপে জরুরি গণমাধ্যমের ইতিবাচক পদক্ষেপ

জেন্ডার বৈষম্য বিলোপে জরুরি গণমাধ্যমের ইতিবাচক পদক্ষেপ

পিআইবি সেমিনার কক্ষে 'গণমাধ্যমে জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপন: পর্যবেক্ষণ, অভিজ্ঞতা ও মতবিনিময়' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক।

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২২ | ১২:৪৭ | আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২২ | ১২:৪৭

সামাজিক দায়বদ্ধতা ও গণমাধ্যমগুলোর ইতিবাচক পদক্ষেপের মাধ্যমে জেন্ডার বৈষম্য বিলোপ করা সম্ভব উল্লেখ করে বক্তারা বলেছেন, নারী-পুরুষের সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হলে জেন্ডার বৈষম্যের পরিসমাপ্তি হবে। এ জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতার সঙ্গে গণমাধ্যমগুলোকে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে। জেন্ডার সংবেদনশীল হতে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সমন্বিতভাবে কাজ করা জরুরি বলেও মনে করেন তাঁরা।

গতকাল বুধবার সকালে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) সেমিনার কক্ষে 'গণমাধ্যমে জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপন: পর্যবেক্ষণ, অভিজ্ঞতা ও মতবিনিময়' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বিশিষ্টজন। পিআইবি ও সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (সাকমিড)-এর আয়োজক। সহযোগিতায় ছিল 'ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড' ও 'প্রোটেক্টিং ইনডিপেন্ডেন্ট মিডিয়া ফর ইফেকটিভ ডেভেলপমেন্ট (প্রাইমড)'।

পিআইবি মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে এবং সাকমিডের উপপরিচালক সৈয়দ কামরুল হাসান ও পিআইবির অধ্যয়ন বিভাগের প্রভাষক শুভ কর্মকারের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীম রেজা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু, বাংলাভিশন টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক মোস্তফা কামাল প্রমুখ।

অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, বিশ্বে অর্থনীতির মতো গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করা হয়। শুধু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করা হয় না। অথচ গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপন কার্যকর হতো। তিনি গণমাধ্যমের নির্দেশক, সংবাদের ধরন, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার ওপর জোর দিয়ে বলেন, এসব বিষয়ে ঘাটতি থাকায় অনেক সময় জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপন হচ্ছে না।

অধ্যাপক আমিনা ইসলাম মতামত ও সংবাদের আধেয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে তিনি ছবি, ভিডিও (টেলিভিশন), বাক্যশৈলীর ওপর কথা জানান। পাঠক ও দর্শকের বিষয়টি মাথায় রেখে সংবাদ প্রস্তুত করার কথাও বলেন এই অধ্যাপক।

মোস্তফা কামাল জেন্ডার সংবেদনশীল শব্দ পরিহারের বিষয়ে আলোকপাত করেন। কীভাবে প্রাঞ্জল ভাষায় জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপন করা যায় তা নিয়ে তিনি আলোচনা করেন।

নাসিমুন আরা হক মিনু নারীকে সংবাদে কিংবা প্রচ্ছদে পণ্য হিসেবে উপস্থাপনের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি সুফিয়া কামাল ও নূরজাহান বেগমের সাংবাদিকতা নিয়ে আলোকপাত করেন। বেগম রোকেয়া পশ্চাৎপদ নারীগোষ্ঠীকে অগ্রসরমান করার জন্য যে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন, তা সবার জন্য অনুপ্রেরণা। দেশীয় চলচ্চিত্র নারীর অবস্থান নিয়েও কথা বলেন এই সাংবাদিক নেত্রী।

সভাপতির বক্তব্যে জাফর ওয়াজেদ বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও গণমাধ্যমগুলোর ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমেই জেন্ডার বৈষম্য বিলোপ করা সম্ভব। তিনি জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপনের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ ছাড়া সংবাদ প্রচারে পাঠক, দর্শক ও শ্রোতাদের বিষয় মাথায় রেখে কনটেন্ট প্রস্তুত করার ওপর জোর দেন জাফর ওয়াজেদ।

আরও পড়ুন

×