ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক

দুর্নীতিবাজদের কাছে ছেলেমেয়ে বিয়ে দেবেন না

দুর্নীতিবাজদের কাছে ছেলেমেয়ে বিয়ে দেবেন না

আদালতের বারান্দায় সেলিম প্রধান

আদালত প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৩ | ১৫:০৭ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩ | ১৫:০৭

দুর্নীতিবাজদের সমাজ থেকে বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে ঢাকার একজন বিচারক বলেছেন, তাদের কাছে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেবেন না। দুর্নীতিবাজরা দাওয়াত দিলে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, জেনেশুনে দুর্নীতিগ্রস্ত কারও দাওয়াতে যাওয়া মানে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নেওয়া।

ঢাকার অষ্টম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বদরুল আলম ভুঞা রোববার এক রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব কথা লিখেছেন।

রায়ে অর্থ পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় অনলাইন জুয়ার কারবারি সেলিম প্রধানকে দুই ধারায় চার বছর করে মোট আট বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন তিনি। সেলিম ছিলেন ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা।

আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক। তবে দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে। ফলে সাজা খাটতে হবে চার বছরের। সাজার পাশাপাশি এক ধারায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং অন্য ধারায় ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। আরেক ধারায় তার অর্জিত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের ঘোষণা দেন আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘সমাজে যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করবেন না।’ আদালত কক্ষে উপস্থিত সবার উদ্দেশে বিচারক বলেন, রায় দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষদের সমাজ থেকে ‘বয়কট’ করতে হবে।

বিচারক বলেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের সঙ্গে আত্মীয়তা করবেন না। তাদের সঙ্গে চলাফেরা করবেন না। তাদের কাছে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেবেন না। বিয়ে দিলেও তারা সুখী হবে না।

মামলায় দুদকের পক্ষে ছিলেন বিশেষ পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল ও আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম।

২০১৯ সালে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে ৫৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ২২ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার চার্জশিট আদালতে জমা দেন। একই বছরের অক্টোবরে এ মামলায় বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। মামলায় ৩৯ সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

সেলিম প্রধান ‘প্রধান গ্রুপ’ নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের অধীনে ‘পি টোয়েন্টিফোর গেইমিং’ নামের একটি কোম্পানি আছে, যারা ওয়েবসাইটে ঘোষণা দিয়ে ক্যাসিনো ও অনলাইন ক্যাসিনো চালিয়ে আসছিল।

অভিযোগ রয়েছে, সেলিম প্রধান ক্যাসিনো খেলে অর্জিত প্রায় ২১ কোটি টাকা পাচার করেছেন থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে। এ ছাড়া তিনি জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকসহ আরও তিন মামলার বিচার চলছে।

আরও পড়ুন

×