সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা দাবি
পুলিশের 'রোষানল' থেকে বাঁচতে চান মধুখালীর ব্যবসায়ী

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৩ | ০৩:১৫ | আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২৩ | ০৩:১৬
ফরিদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রাকিব হাসানের 'রোষানল থেকে বাঁচতে চেয়ে' সংবাদ সম্মেলন করেছেন ফরিদপুরের মধুখালীর এক ব্যবসায়ী। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবি জানান তিনি। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম ছামাদ খান। এ সময় তাঁর ছেলে আবু হুরায়রা ও আরেক ভুক্তভোগী প্রশান্ত কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ছামাদ খান বলেন, ফরিদপুরের মধুখালীতে তাঁর ওষুধের ব্যবসা আছে। পাশাপাশি রেন্ট-এ-কারের (ভাড়া গাড়ি) ব্যবসা করেন তিনি। পুলিশ কর্মকর্তা রাকিব ২০১৭ সালে মধুখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় পারিবারিক একটি মামলায় জড়ান ছামাদ। মামলাটি রাকিব নিজে তদন্ত করেন এবং মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন। তাঁকে ৩০ হাজার টাকাও দেওয়া হয়। তবে টাকা চাহিদা মতো না হওয়ায় পরিণাম অনেক খারাপ হবে বলে হুমকি দেন রাকিব।
ওই ব্যবসায়ী বলেন, ওই মামলায় নিজ মালিকানাধীন মাইক্রোবাস জব্দ করেন পুলিশ কর্মকর্তা রাকিব। পরে আদালতের মাধ্যমে গাড়িটি অনেক দিন পর ছাড়িয়ে আনা হয়। গত ১৯ জুলাই ওই গাড়ির চালক প্রশান্ত কুমার সাহা ঢাকার চারজন যাত্রী নিয়ে মধুখালী থেকে রওনা হন। পথে এসআই জাকির নামে ডিবির একজন সদস্য ও আলী আকবর নামে এক ব্যক্তি গাড়িতে ওঠেন। পরে রাজবাড়ী মোড়ে ডিবি পুলিশ গাড়ির গতিরোধ করে এবং চালক প্রশান্তকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসটিও নিয়ে যায় ডিবির লোকেরা।
ছামাদ খান বলেন, পরদিন ডিবি কর্মকর্তা রাকিব ফোন করে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে এসআই জাকিরও ফোন করে রাকিবের পক্ষে ঘুষ দাবি করেন। টাকা না পেয়ে গাড়িটি মিথ্যা মামলায় জব্দ দেখানো হয়। মামলায় চালক প্রশান্তকে পলাতক আসামি করা হয়। অথচ ২ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ২০ জুলাই তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর দাবি, ফরিদপুর জেলা এসপি অফিসের সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে এসবের সত্যতা পাওয়া যাবে।
ওই ব্যবসায়ী বলেন, ডিবি কর্মকর্তা রাকিব ২১ জুলাই রাতে ফোন দিয়ে গালাগাল করেন এবং হত্যার হুমকি দেন। রাকিবের বিরুদ্ধে এর আগে পুলিশ সদরদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। এখন ডিবি তাকে ধরতে প্রতিদিন অভিযান চালাচ্ছে। জীবনের ভয়ে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছেন না। তাঁর আশঙ্কা, যে কোনো সময় রাকিব তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতে পারেন, অথবা মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে পারেন।
অভিযোগের বিষয়ে ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা রাকিব হাসান সমকালকে বলেন, ছামাদ খান একজন মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে অভিযানে গেলেই পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলেন। মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক কারবারির কাছ থেকে টাকা খাওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, গত ১৯ জুলাই মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আলী আকবরসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আকবরের কাছ থেকে ৩ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়। গাড়িটি জব্দ করা হয়। ছামাদ খান গাড়িটি ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়ে ফোনও করিয়েছিলেন।
- বিষয় :
- পুলিশের রোষানল
- নিরাপত্তা দাবি