নবায়নেযাগ্য জ্বালানি নিয়ে সরকারের নীতি ব্যর্থ: ম. তামিম

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম. তামিম
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৩ | ১৬:৩৯ | আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২৩ | ১৬:৩৯
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সরকারের আস্থা নেই। তাই গত ১৪ বছরে এ খাত থেকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত আসেনি। এটি পরিষ্কার ব্যর্থতা। এ সরকারের নীতি ব্যর্থ হয়েছে, এটি পুনর্বিবেচনা করা দরকার। গত কয়েক বছরে এ খাতে যতটুকু সফলতা এসেছে তা মূলত বেসরকারি খাতে।
‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে যত ভুল ধারণা’ শিরোনামে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বুধবার এসব কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম. তামিম। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সানেম জানায়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে চারটি বড় বিতর্ক বা ভুল ধারণা চিহ্নিত তারা। এগুলো হলো সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলের ‘জীবনচক্র’ শেষ হওয়ার পর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবচেয়ে বড় বাধা জমির অপ্রতুলতা, সৌরপ্রযুক্তির সঙ্গে ব্যাটারির খরচ যুক্ত করলে এটি সাশ্রয়ী হবে না এবং ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কি সম্ভব! অনুষ্ঠানে সানেম জানায়, বলা হয়, বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে অর্জন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সাফল্য অর্জনের বৈশ্বিক প্রবণতা ইতিবাচক হলেও বাংলাদেশ এখনও কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখাতে পারেনি।
অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে ম তামিম বলেন, জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। এরপর আবার চাহিদার জোগান নিশ্চিত না করেই শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। এখন মানুষের ঘরে সংযোগ আছে কিন্তু বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে অন্তত দিনের চাহিদা পাঁচ থেকে ছয় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত পূরণ করা যায়। এর জন্য সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্ব দরকার।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, এখন মাত্র সাড়ে তিন শতাংশ। এখান থেকে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাওয়া অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। এত বড় লক্ষ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। কিন্তু বছর বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরে এগোলেই উন্নতি হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা বলেন, ভিয়েতনাম মাত্র দুই বছরে ১৬ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ করে দেখিয়েছে। এর একটি বড় অংশ করেছে ছাদ ব্যবহার করে। তার মানে জমির স্বল্পতা কোনো সমস্যা নয়। সৌর প্রযুক্তি নিয়ে নিয়মিত গবেষণা হচ্ছে, খরচ আরও কমে আসবে। ২৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সমন্বিত উদ্যোগ লাগবে।
ওয়েবিনারের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সানেমের গবেষণা পরিচালক সায়েমা হক। ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন সানেমের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহকারী ইসরাত হোসেন।
- বিষয় :
- নবায়নযোগ্য জ্বালানি
- ম. তামিম