ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

গবেষণা

‘ধর্মীয় গোষ্ঠীর চাপে সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারে দিতে পারছে না সরকার’

‘ধর্মীয় গোষ্ঠীর চাপে সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারে দিতে পারছে না সরকার’

গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠান

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩ | ০৯:৫৭ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩ | ১০:০৪

‘সরকার নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নে আন্তরিক। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার দিতেও শেখ হাসিনার সরকার চেষ্টা করছে। তবে ধর্মীয় গোষ্ঠীর চাপে সরকার সম্পত্তিতে সমান অধিকার দিতে পারছে না।’ এমন মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়  স্থায়ী কমিটির সদস্য লুৎফুন নেসা খান। 

তিনি বলেন, পরিবারে নারী নির্যাতন বন্ধ করতে ইউনিয়ন পর্যায়ের মিটিংগুলোতে নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতা কতটা হয়েছে, কারা করেছে তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এছাড়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আলোচনায় এই বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন তিনি। তিনি ‘তথ্য আপা’কে পারিবারিক সহিংসতা আইন-২০১০ বিষয়ে তথ্য দিয়ে নারীদের সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করেন।

পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০ প্রায়োগিক প্রতিবন্ধকতা ও বাস্তবায়ন বিষয়ক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার ডেইলি স্টার ভবনে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে নাগরিক জোট (সিআইডিবি) যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। বিআইজিডি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল তুলে ধরেন বিআইজিডি’র সিনিয়র ফেলো মাহিন সুলতান ও সিনিয়র রিসার্চ এসোসিয়েট প্রজ্ঞা মাহ্পারা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্লাস্ট-এর পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ জোট বিষয়ক মুখপাত্র তাপসী রাবেয়া। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন ও বিচার বিভাগীয় সংসদীয় কমিটির সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা এমপি, সরকারের নারীবিষয়ক প্রকল্পের সহকারি পরিচালক আয়শা সিদ্দিকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, ব্লাস্ট-এর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, মহিলা পরিষদের মুন্সিগঞ্জের এপিপি অ্যাডভোকেট নাসিমা বেগম, সুইডিস দুতাবাসের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধি রেহানা খান, মুন্সিগঞ্জের জেলা নারী বিষয়ক কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌসী, উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন তেজগাঁও-এর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার হুমায়রা পারভীন, ব্র্যাকের এসইএলপি-এর প্রকল্প পরিচালক মিতালী জাহান। 

গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার নারীর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেন, পারিবারিক সহিংসতার জন্য আমাদের পারিবারিক ও পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি দায়ী। সমাজের চিরায়ত কুসংস্কার বড় বাধা হিসেবে দেখা যায়।

অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা বলেন, আইনটি সম্পর্কে মানুষ জানে কম, আইন প্রয়োগকারী সংস্থারও আগ্রহ কম। আইনে কতটা আঘাত প্রাপ্ত হলে নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হবে তা উল্লেখ নেই। ডিভোর্স দেওয়ার পর স্ত্রীকে নির্যাতন করার বিষয় আইনে আসেনি। 

মাহিন সুলতান বলেন, ১৩ বছরেও আইনটি অব্যবহৃত রয়ে গেছে। আইনের সীমাবদ্ধতা হলো এটি কিছুটা সিভিল ও কিছুটা ক্রিমিনাল পর্যায়ের। আইনজীবীদের ধারণা কম। এখনও সমাজে পারিবারিক নির্যাতনকে আমলে আনা হয় না। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় শুরুতে আইনটিকে যতটা গুরুত্ব দিত পরে তা দেয়নি। 

বক্তরা বলেন, নারী নির্যাতন এতটাই বেড়েছে যে, মহিলা ও শিশু নির্যাতন বিষয়ক ট্রাইব্যুনাল ৫টির জায়গায় বর্তমানে ৯টি করা হয়েছে। প্রতিনিয়তই নির্যাতনের শিকার নারীর সংখ্যা বাড়ছে। 

আরও পড়ুন

×